5.6 C
New York
Thursday, April 25, 2024

Buy now

আমার স্ত্রীকে রাতে ফোন করে গালাগাল পর্যন্ত করেছে: তামিম

জাতীয় দলের অন্যতম সেরা ওপেনার ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। যার ব্যাটিং ছোয়ায় বাংলাদেশ বহুবার জয়ের মুখ দেখেছে। তাছাড়াও ব্যাক্তি তামিম হিসেবেও চমৎকার মানুষ হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। বিজ্ঞাপনে তামিমের একটি স্পিচ ছিল, ‘আমি জিতলে জিতে যায় মা।’ বাংলাদেশের মানুষ জানে, তামিম ভালো খেললে ভালো খেলে বাংলাদেশ।

তাছাড়া দেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রান, সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি—এ সব পরিসংখ্যান তো ক্রিকেটার তামিমের ছবিটা তুলে ধরে ভক্তদের কাছে। কিন্তু ব্যক্তি তামিম কেমন? কেমন তাঁর চিন্তাভাবনা, জীবনদর্শন? এসব ফুটে উঠেছে দেশের জনপ্রিয় একটি সংবাদমাধ্যমে। সেখানে এক প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেন ক্রিকেট খেলার সুবাধে বিশ্বের অনেক দেশে গিয়েছি কিন্তু মক্কা-মদিনার মতো শান্তি কোথাও পায়নি।

এদিকে সেই সাক্ষাৎকারে তামিমকে প্রশ্ন করা হয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসার পর নিশ্চয়ই ২০১৫ সালটাকেই সবচেয়ে বাজে সময় বলবেন?

জবাবে তামিম বলেন, ‘হ্যাঁ, ২০১৪-১৫। তবে সেটা ছিল অন্যরকম। আমার প্রতি মানুষের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। আমি ভালো খেললাম কি খারাপ খেললাম—এসব নিয়ে বেশি আলোচনা হতো। সবচেয়ে খারাপ ছিল একটু খারাপ খেললে যেভাবে আমাকে আক্রমণ করা হতো। এটা যদি শুধু আমার ওপর থাকত, আমি হয়তো সামলে নিতে পারতাম। কিন্তু বিষয়টা আমার পরিবার পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। আমার স্ত্রীকে রাতে ফোন করে গালাগাল দিয়েছে মানুষ। এই জিনিসটা নিতে পারিনি আমি।’

‘আমার কথা হলো, তাদের কী দোষ? তারা তো আর খেলে না, ব্যাটিং করে না। আমি খেলি, আমি ব্যাটিং করি…খারাপ খেললে আমি খারাপ খেলি। আমার পরিবারকেও যখন মানুষ আক্রমণ করল, আমার মাথা ঠিক থাকল না। ওই সময়ে আমি সবচেয়ে ভালো যে কাজটা করেছি, তা হলো ওমরাহ করতে চলে যাওয়া।’

এরপর থেকে তো প্রায়ই ওমরাহ করতে যান। প্রতিবারই কি এর সঙ্গে বাজে সময় কাটিয়ে ওঠার সম্পর্ক থাকে? তামিম বলেন, ‘দেখুন, তখনো কিন্তু আমি এক মুহূর্তের জন্য ভাবিনি এর সঙ্গে ভালো খেলতে চাওয়ার কোনো সম্পর্ক আছে। আমি গিয়েছিলাম মানসিক প্রশান্তির জন্য। সবাই বলে সবচেয়ে শান্তির জায়গা মক্কা-মদিনা। আমি সেই শান্তির খোঁজে গিয়েছিলাম। খেলার সুবাদে আমি অনেক দেশে ঘুরেছি, কিন্তু ওরকম শান্তি কোথাও পাইনি। সব ধর্মের প্রতিই আমি শ্রদ্ধাশীল।’

‘তবে মুসলমানদের মধ্যে যাঁরা ধর্ম পুরোপুরি মানেন না, তাঁদের একটা কথা বলতে চাই। ছুটি কাটাতে তো আপনারা অনেক জায়গায় যান। ওমরাহ বা হজকরার দরকার নেই, ছুটি কাটানোর কথা ভেবেই একবার মদিনায় যান। তাহলে বুঝবেন জায়গাটা আসলে কী। ওখানে যাঁরা গেছেন তাঁরাই শুধু জানেন মক্কা-মদিনায় কী শান্তি আছে।’

‘ওখানে যাওয়ার পর ক্রিকেট, ধনসম্পদ, টাকাপয়সার কথা একবারের জন্যও আমার মাথায় আসেনি। আমি শুধু আল্লাহর কাছে মাফ চেয়েছি। যে মানসিক শান্তিটা ওখানে পেয়েছি, আমার জন্য ওটা ছিল অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ক্রিকেট, ব্যক্তিগত জীবন—সবকিছুর জন্যই। আমি খুব সতেজ হয়ে ফিরে আসি সেখান থেকে। আল্লাহও আমার প্রতি অত্যন্ত সহায় ছিলেন। আমি পাকিস্তান সিরিজে খেলি। বাকিটা ইতিহাস।’

এ সময় অন্য একটি প্রশ্নের উত্তরে তামিম বলেন, ‘ভালো–খারাপ মিলিয়েই মানুষ। আমার মধ্যেও খারাপ অনেক কিছু আছে। প্রথমত ধর্মীয় দিক থেকে আমি যদি আরেকটু সচেতন হই, আমি যদি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারি। আমি সবসময় তা পারি না। আমার খারাপের মধ্যে এটা অন্যতম। আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন, তাঁর প্রতি আমার আরও কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।’

‘আর একটা জিনিস, আমি মানুষের সঙ্গে অনেক মজা করতে পছন্দ করি। তবে সেটা কখনোই কাউকে কষ্ট দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়। আমি মজা করি তাদের সঙ্গেই, যাদের সঙ্গে আমি ঘনিষ্ঠ। তবে আমার মজার কারণে কিছু মানুষ কখনো কখনো কষ্টও পেয়ে যেতে পারেন। তাঁদের এটাই বলব, আমি এটা ইচ্ছা করে করি না।’

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,913FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles