বৃষ্টি বিঘ্নিত বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্তই হয়ে গেলো। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডমিনিকার উইন্ডসর পার্কে বাংলাদেশ ১৩ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান তোলার পর বৃষ্টি নামলে বন্ধ হয় ম্যাচ। ফলে কার্টেল ওভারের হিসেবে ১৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লক্ষ্য দাঁড়ানোর কথা ছিল ১০৮ রানের।
দর্শকরা অপেক্ষায় ছিলেন বৃষ্টি বন্ধ হলে স্বাগতিকদের ব্যাটিং দেখার। এমন সময়ে আম্পায়াররা জানিয়ে দেন, খেলা আর নতুন করে শুরু হবে না। অর্থাৎ প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, স্থানীয় সময় ৫টা ১৮ মিনিটের মধ্যে (বাংলাদেশ সময় রাত ৩টা ১৮) কমপক্ষে ৫ ওভারের ম্যাচ শেষ করতে হতো। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বৃষ্টির কারণে ব্যাটিংয়েই নামতে পারেনি।
আরও পড়ুনঃ পন্ত-জাদেজার সেঞ্চুরিতে ভারতের সংগ্রহ ৪১৬
বাংলাদেশ এবং উইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ভেজা আউটফিল্ডের কারণে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়। ২০ ওভারের খেলা নেমে আসে ১৬ ওভারে। পরে আবারও বৃষ্টি বাগড়া দিলে খেলা বন্ধ থাকে আরও আধ ঘণ্টার মতো। পরিবর্তিত আরও দুই ওভার কমিয়ে ম্যাচ শুরু করলেও শেষ করা যায়নি এক ইনিংস। বাংলাদেশের ইনিংসের ১৩ ওভার পার হতে ফের বৃষ্টি শুরু হয়।
সফরকারী বাংলাদেশ টস হেরে ব্যাটিং করতে নামলে আকিল হোসেনের করা প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই উইকেটরক্ষকের ক্যাচ হয়ে ফেরেন মুনিম শাহরিয়ার (২)। ২ রান তুলতেই প্রথম উইকেট হারায় টাইগাররা। দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর পর টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা ব্যাটার এনামুল হক বিজয় নিজের প্রথম দুই বলেই হাঁকান বাউন্ডারি। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলে সাকিবের সঙ্গে দারুণ এক জুটি গড়েন তিনি।
আরও পড়ুনঃ কাজ করি বলেই আমাকে নির্বাচিত করা হয়: সালাউদ্দিন
তবে ঝড় তুলেই থামতে হয় বিজয়কে। ১০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৬ রান করে ওবেদ ম্যাকয়ের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। রিভিউ নিয়েও কাজ হয়নি। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে তার জুটিটি ছিল ১৮ বলে ৩৪ রানের। এদিকে বিজয় আউট হলেও এই জুটিতে ভর করেই পাওয়ার প্লেতে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। ৫ ওভারে তোলে ২ উইকেটে ৪৬ রান। ৯ ম্যাচ পর পাওয়ার প্লেতে ৪০-এর ওপর রান পায় টাইগাররা।
লিটন দাস শুরু থেকেই গ্যাপ বের করতে পারছিলেন না। শেষ পর্যন্ত রোমারিও শেফার্ডের স্লোয়ার বলে টাইমিং গড়বড় করে মিডউইকেটে লিটন ক্যাচ (১৪ বলে ৯) তুলে দেন। ফলে ৫৬ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে সাকিব আল হাসান ব্যতিক্রম ছিলেন। একমাত্র টি-টোয়েন্টির ব্যাটিংটা শুরু থেকেই করতে পেরেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। তার ব্যাটে ভর করেই মূলত পাওয়ার প্লেতে ভালো সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
তবে সাকিবের ইনিংসটিও বেশি বড় হয়নি। ১৫ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় মারকুটে এই ইনিংস খেলে ব্যাক্তিগত ২৯ রানে স্পিনার হেইডেন ওয়ালশের শিকার হন সাকিব, ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন উইকেটরক্ষকের হাতে।
আরও পড়ুনঃ ইতালিয়ান লিগে প্রথম নারী রেফারি কাপুতি
খেলার অষ্টম ওভারে সাকিব ফেরার পরই নামে বৃষ্টি। ফলে ম্যাচ বন্ধ থাকে অনেকটা সময়। প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবার শুরু হয় খেলা। আর বিরতির পর প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ইনিংসের অষ্টম ওভারে হেইডেন ওয়ালশের করা তৃতীয় বলে আউট হন সাকিব, এক বল বিরতি দিয়ে আফিফও আকাশে ক্যাচ (২ বলে ০) তুলে দিলে ৬০ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহ ধীরগতির এক ইনিংস (১৩ বলে ৮) খেলে সাজঘরের পথ ধরেন। শেফার্ডের ওই ওভারেই মাহেদি হাসান (১) উইকেটের পেছনে ক্যাচ হলে ৭৭ রানে ৭ উইকেট হারায় টাইগাররা।
ওডিয়ান স্মিথের করা ইনিংসের ১৩তম ওভারে দুটি ছক্কা হাঁকান সোহান। ওই ওভারেই কব্জির জোরে আরেকটি ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে কাউ কর্নারে ক্যাচ হন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ১৬ বলে ১ চার আর ২ ছক্কায় ২৫ রানের ঝড়ো ইনিংস বেরিয়ে আসে তার উইলো থেকে। নাসুম আহমেদ অপরাজিত থাকেন ৪ বলে ৭ রানে।
স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন রোমারিও শেফার্ড। ২১ রানে ৩টি উইকেট নেন তিনি।
বিডি স্পোর্টস নিউজ/এইচএন