11.2 C
New York
Thursday, April 25, 2024

Buy now

জেনে নিন মানকাড়িং আউটের আদ্যোপান্ত

বাইশ গজে ক্রিকেটের স্পিরিটকে ধরে রাখতে সাধারণত মানকাড়িয়ের থেকে বিরতই থাকেন বোলাররা। তাই ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে বসে সচরাচর এই শব্দ শোনা যায় না। বস্তুত গত এগারোটি আইপিএলেও কখনও এই শব্দ ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি।

কিন্তু ২৫ মার্চ সোমবার রাতে ছবিটা পালটে দিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। নন-স্ট্রাইকার এন্ডে দাঁড়িয়ে থাকা জস বাটলারকে ডেলিভারির আগের মুহূর্তে আউট করেন তিনি। আর তারপর থেকেই চর্চায় এই শব্দ। কিন্তু কী এই মানকাড়? কেনই বা এই বিষয়টিকে মানকাড় বলা হয়? শব্দের উত্পত্তিই বা কোত্থেকে? যে বিষয়টি নিয়ে উত্তাল গোটা বিশ্বের ক্রিকেট মহল, চলুন তা নিয়ে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

কোনও ব্যাটসম্যান নন-স্ট্রাইকার এন্ডে থাকাকালীন বোলারের ডেলিভারির আগে যদি ক্রিজ থেকে বেরিয়ে যান, তখনই মানকাড়িংয়ের প্রসঙ্গে উঠতে পারে। কারণ সেই মুহূর্তে বোলার উইকেটে বল ঠেকিয়ে দিলেই ওই ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যান। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে নন-স্ট্রাইকার এন্ডে থাকা ব্যাটসম্যানদেরই এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। রান নেওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত থাকেন তিনি। স্ট্রাইকার ইশারা করলেই দৌড় লাগান। ইংল্যান্ডের ম্যারিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবে (এমসিসি) রয়েছে ক্রিকেটের রুলবুক। যেখানে স্পষ্ট ভাষায় লেখা রয়েছে, নন-স্ট্রাইকার এন্ডের ব্যাটসম্যান যদি বল ডেলিভারির আগেই ক্রিজ ছাড়েন, তবে সাধারণত বোলার বলটি ডেলিভার করে দেন। তবে এক্ষেত্রে ওই ব্যাটসম্যানকে রান আউট করার অনুমতিও রয়েছে বোলারের। বোলারের চেষ্টা সফল হোক বা ব্যর্থ, সেই বলকে ওভারের একটি ডেলিভারি হিসেবে ধরা হবে না। যদি বোলার আউট করতে ব্যর্থ হন, তবে আম্পায়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেড বলের ইশারা করতে পারেন।

তবে ২০১৭ সালে এই আইনে খানিক পরিবর্তন আনে এমসিসি। নতুন নিয়মে আরও খানিকটা ছাড় দেওয়া হয় বোলারকেই। এর আগে ডেলিভারির জন্য বোলারের দৌড়ের সময়ের মধ্যেই নন-স্ট্রাইকিং এন্ডের ব্যাটসম্যানকে আউট করা যেত। কিন্তু পরিবর্তিত নিয়ম অনুযায়ী, বোলার যদি ডেলিভারির জন্য খানিকটা হাত ঘুরিয়েও ফেলেন, তারপরও রান আউটের সুযোগ পাবেন তিনি। আসলে ব্যাটসম্যানকে সতর্ক করতেই ৪১.১৬ আইনে বদল আনা হয়েছিল। কিন্তু এই বিষয়টিকে মানকাডিং কেন বলা হয়? আসলে এক ভারতীয় ক্রিকেটারের নামানুসারেই প্রচলিত হয়েছিল মানকাড। তিনি বিনোদ মানকাড।

ঘটনা ১৯৪৭ সালের ১৩ ডিসেম্বরের। প্রথমবার বাইশ গজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই ঘটনা ঘটিয়েছিলেন বিনোদ মানকাড। নন-স্ট্রাইকার এন্ডে থাকা বিল ব্রাউনকে এই ভঙ্গিতেই আউট করেছিলেন বিনোদ। সেই সময় অজি সংবাদমাধ্যমের কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। তবে এমন পরিস্থিতিতে অজি অধিনায়ক ডন ব্র্যাডম্যানকে পাশে পেয়েছিলেন মানকাড। ব্র্যাডম্যানও বলেছিলেন, এক্ষেত্রে স্পোর্টসম্যান স্পিরিটের প্রশ্ন ওঠার কোনও মানে নেই। ক্রিকেটের রুলবুকেই এই নিয়ম স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে।

এত বছর পর একই ঘটনা ঘটিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের বিরাগভাজন হলেন অশ্বিন। কিন্তু তিনিও নিজের আচরণে অনুতপ্ত নন। তাঁর দাবি, তিনি নিয়মভঙ্গ করেননি। তবে আফসোস একটাই, স্যর ডনকে নিজের পাশে পেলেন না অশ্বিন।

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,913FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles