বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের হৃদয়ের দাবি মেনে টানা দ্বিতীয় বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠলো বাংলাদেশ। মুশফিকের অসাধারণ ব্যাটিং আর মুস্তাফিজের বিদ্ধংসী বোলিং নৈপুণ্যে পাকিস্তানকে হেসে খেলে হারিয়ে ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল খেলার টিকেট পেলো বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ইনিংস শুরু হতেই ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে সংশয় শুরু হয়েছিল বাংলাদেশ শিবিরে। কিন্তু উদ্বোধনী ম্যাচেও শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে যে জুটি উদ্ধার করেছিল বাংলাদেশকে সেই মুশফিক আর মিঠুনের জুটিই আবার জয়ের পথ দেখালো।
দুঃখজনকভাবে ১ রানের জন্য এশিয়াকাপের তৃতীয় সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয়ে গেলেও বাংলাদেশের ২৩৯ রানের ইনিংসে সবচেয়ে বড় অবদান তাঁরই। অন্যদিকে মিঠুন করেছেন ৬০ রান। মুশফিক মিঠুনের ১৪৪ রানের বিশাল জুটির পর ধারণা করা যাচ্ছিলো বাংলাদেশ হয়তো ২৭০-২৮০ তে গিয়ে থামবে। কিন্তু ৫ উইকেটে ১৯৭ রান করার পরও মুশফিক মিঠুনের আউট হওয়ার পর বাংলাদেশ যেন যাওয়া আসার মধ্যেই ছিল। বাকি ৫ জনের মধ্যে মাহমুদুল্লাহ যা একটু চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু বাকিরা কিছুই দিতে পারেননি। শেষ ৫ ওভার যেন বাংলাদেশের জন্য হতাশার কালো ছায়া। ৭ বল বাকি থাকতেই ২৩৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
তবে ম্যাচের শুরুতেই পাকিস্তানের মনোবল ভেঙে দিতে বাংলাদেশের বোলাররা যা করেছেন তা অতুলনীয়। মাত্র ১৮ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান পড়েছিল অথই সাগরে। সাকিবের অভাবটা যেন কোনোমতেই বুঝতে দেননি মাহমুদউল্লাহ-সৌম্যরা। ১০ ওভার বল করে মাত্র ৩৮ রান দিয়ে মাহমুদউল্লাহ পেয়েছেন ১ উইকেট অন্যদিকে ব্যাটিংয়ে চরমভাবে পার্থ হলেও ৫ ওভার বল করে সৌম্য সরকার পেয়েছেন ১ উইকেট। শাকিব তামিমের অনুপস্থিতিতে দলে জায়গা পেলেও ব্যাটিংয়ে ভালো কিছু করে দেখতে পারলেননা সৌম্য। ৫ বলে শূন্য রান করে আউট হন তিনি।
পাকিস্তানকে ধ্বসিয়ে দিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবদান মুস্তাফিজের। ১০ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন তিনি। বাংলাদেশের জয়ে কাটা হয়ে যাওয়া এমাম উল হককে আউট করেন মাহমুদউল্লাহ। বাবর, সরফরাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ উইকেটগুলো নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন মুস্তাফিজ। ম্যাচের শুরুতেই ফখর জামানের উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ব্রেকথ্রু এনে দেন মিরাজ।
সব শেষে বলতে হয় পাকিস্তানের বিপক্ষে কিছু ভুল ত্রুটি ছাড়া এই ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য একটি পরিপূর্ণ টীম ওয়ার্ক। এখন দেখার বিষয় সর্বশেষ চার এশিয়া কাপের তিনবারই ফাইনালে ওঠা বাংলাদেশ এবার কি পারবে সকল বাধা ভেঙে ভারতে বিপক্ষে শিরোপা জিততে!