২০২০ সাল। এই সালটা যেন সবার কাছেই বিষাদময় একটি সাল। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এক ভাইরাস এসে লণ্ডভণ্ড করে দিয়েছে পুরো বিশ্বকে। স্তব্দ হয়ে পড়েছে সব কিছুই। অদৃশ্য এ ভাইরাসের ছোবলে বদলে গেছে সবার জীবনধারা। চলছে নিরন্তর যুদ্ধ।
মারাত্মক প্রভাব পড়েছে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই। তার থেকে আলাদা নয় ক্রীড়াঙ্গন ও। ক্রীড়াঙ্গনে করোনার আঘাতের মাত্রা ছিল ব্যাপক। তারপরও থেমে না থেকে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে লড়াই চলছিল প্রতিনিয়ত। এ যেন নিজের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এর মধ্যে রয়েছে কিছু প্রাপ্তি আর কিছু র্ব্যথতা।
একনজরে দেখে নেই এ বছরর কিছু প্রাপ্তি আর কিছু অপ্রাপ্তি গুলো-
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে কাতারের বিপক্ষে বড় হার সেই সাথে নেপালের বিপক্ষে সিরিজও জিতেছে বাংলাদেশ।
রয়েছে মহামারির মধ্যেই দেশের ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের ৪র্থবারের মতো দেশের ফুটবলকে এগিয়ে নেওয়ার ম্যান্ডেট পাওয়া।
এদিকে করোনার কারনে মার্চ মাসে পেশাদার ফুটবল লিগ স্থগিত হওয়ার আগে ফেডারেশন কাপ দিয়ে শুরু হয় ঘরোয়া ফুটবল।এতে চ্যাম্পিয়ন হয় বসুন্ধরা কিংস। ১৫ মার্চের ম্যাচের পর লিগ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
স্থগিত করা হয়েছিল মেয়েদের লিগও। তবে অনেক কিছুর পর অবশেষে নভেম্বরে মেয়েদের লিগের বাকি খেলাগুলো হয়েছে। তাতে বসুন্ধরা হয়েছে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন।
নভেম্বরে ফেডারেশন কাপ দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু হতেই যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে সবাই!
৬ বছর পর বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া আই-লিগে কলকাতা মোহামেডানে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় তার খেলা অনিশ্চয়তায় ঢাকা পড়ে যায়। তবে শেষ পর্যন্ত জামাল সেখানে গেছেন। এখন আছেন মাঠে নামার অপেক্ষায়।
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী বড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বাংলাদেশ গেমস হওয়ার কথা ছিল গত এপ্রিলে। করোনায় স্থগিত হয়ে গেছে এই প্রতিযোগিতা। শুধু এ প্রতিযোগিতাই না স্থগিত হয়ে গেছে অনেক প্রতিযোগিতাই। তাছাড়া মার্চে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্টান সাইক্লিং, জুনে অনূর্ধ্ব-২১ হকি, নভেম্বরে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকিও টার্ফে গড়াতে পারেনি।
করোনার কারনে মাঠে খেলতে না পেরে বেড়েছে অনলাইনে খেলার চর্চা। দাবা, শুটিং, তায়কোয়ান্দোসহ আরও কিছু খেলায় অংশ নিয়েছেন ক্রীড়াবিদেরা। শুটিংয়ে আব্দুল্লাহ হেল বাকী, শাকিল আহমেদ দেখেছেন সাফল্যের মুখ। দাবায় গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীব সাফল্য পেয়ে জিতেছেন অর্থ পুরস্কারও। জিমন্যাস্টিকসে বিকেএসপির আবু সাঈদ রাফি সরাসরি রাশিয়াতে খেলে জিতেছেন ব্রোঞ্জ।
এই মহামারিতে কিছু প্রাপ্তির পাশাপাশি হারিয়েছি অনেক পরিচিত প্রিয় মুখ। যাদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে।
এই বছর আমরা যাদের হারিয়েছি তারা হচ্ছেন-
ফুটবলার ও সংগঠক বাদল রায়, সাবেক তারকা ফুটবলার গোলাম রব্বানী হেলাল, জাতীয় দলের সাবেক কৃতি মিডফিল্ডার নুরুল হক মানিক, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের স্ট্রাইকার নওশেরুজ্জামান, সাবেক হকি তারকা এহতেশাম সুলতান, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য লুৎফর রহমান, সংগঠক আব্দুল মোনেম খান, রেফারি আব্দুল আজিজ, সাবেক ক্রিকেটার রামচাঁদ গোয়ালা, এএসএম ফারুক, অ্যাথলেট কাজী জাহেদা আলী, ক্রিকেট সংগঠক সেলিম আবেদীন, কারাতে কোচ হুমায়ুন কবীর জুয়েল, ভলিবল কোচ গোলাম রসুল মেহেদী ও সংগঠক মবিনুল ইসলাম।