২০১৯ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে সেমিফাইনার খেলার লক্ষ্য নিয়ে দেশ ছেড়েছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু সেমিফাইনালতো দূরে থাক এক ম্যাচ বাকি থাকতেই বিশ্বকাপ থেকে মাশরাফিদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়। আট ম্যাচে মাত্র তিন জয় ও পরিত্যাক্ত ম্যাচ থেকে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে টেবিলের আট নম্বরে থেকে আসর শেষ করে বাংলাদেশ।
পুরো বিশ্বকাপে সাকিবের পারফরম্যান্স বাদ দিলে প্রতি ম্যাচেই ব্যাটিং, বোলিং নতুবা ফিল্ডিং ডুবিয়েছে বাংলাদেশকে। ২০০৭ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ আসরে তিনটি ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর আর তিনটি আসর খেলে ফেললেও তিন জয়ের ফ্রেমে আটকে আছে বাংলাদেশ। তবে এত কিছুর পরও বিসিবি সভাপতি মনে করেন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সফর। এটা না বললে নাকি ‘ছেলেদের (ক্রিকেটারদের) প্রতি অন্যায় হয়!’
আইসিসির বার্ষিক সভা শেষে দেশে ফিরে আজ ধানমন্ডিতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয় এর পেছনে বেশ কয়েকটি যুক্তিও দাঁড় করিয়েছেন তিনি।
চলুন বিশ্বকাপে বাংলাদেশ কেন সফল তার উপর পাপনের যুক্তি গুলো দেখে নিই
১. ‘শ্রীলঙ্কার (ব্রিস্টলে) সঙ্গে আমরা হারতেও পারতাম। বলছি না যে আমরা খেললে জিতে যেতাম। যদি বৃষ্টি না হতো দেশের সকলেই বিশ্বাস করে যে আমরা জিততাম। আমিও বিশ্বাস করি যে আমরা জিততাম। জিতলে আমরা ছয়ে থাকতাম।’
২. ‘দ্বিতীয় ম্যাচটাও আমাদের জেতা ম্যাচ (ওভালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে)।’
৩. ‘ভাগ্য অনেক বড় একটা ব্যাপার। আরেকটা জিনিস মনে রাখবেন নয় ম্যাচের মধ্যে আটটায় টস হেরে গেলাম। এখানে ভাগ্যের একটা ব্যাপার আছে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ঘণ্টায় ১৫০ (কিলোমিটার) গতিতে বল করত কজন বোলার? এখন যে ১৫০ (কিলোমিটার) গতি বলের বিপক্ষে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ৩০০ রান করেছে সেটাই অনেক বড় ব্যাপার।
কীসের সঙ্গে কী মেলাচ্ছেন, চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন এখন। সাকিবের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দেখেন, আমি তো মনে করি সে (এই বিশ্বকাপের) সেরা খেলোয়াড়। যদিও পেয়েছে আরেকজন। এর আগে কখনো এমন হয়েছে? বাংলাদেশের কার নাম শুনেছেন যে সেরা খেলোয়াড়?’
৪. ‘দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আমরা ভালো করেছি, নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে কপাল খারাপ। মুশফিকের মতো উইকেটরক্ষকের হাতে লেগে বেল পড়ে যায়? না হলে ওই ম্যাচ আমরা জিততাম না? সবাই মনে করে জিততাম। মুশফিকের রান আউটটাও দুর্ভাগ্য। ও রানআউটটা না হলে আরও কিছু রান হতো। ওটা হলে আমরা ভালো অবস্থানে থাকি।’
৫. ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে দুর্দান্ত জয়। অসাধারণ খেলেছে, বিদেশের মাটিতে জেতা সহজ কথা নয়। আমরা জিতেছি, খুব ভালো করেছি।’
৬. ‘আফগানিস্তানের সঙ্গেও জিতেছি। আশাই ছিল যে জিতব, আফগানিস্তান খারাপ দল নয়। বিশ্বকাপ যারা খেলে সবাই ভালো।’
৭. ‘(ট্রেন্ট ব্রিজে) অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ৩৩৩ রান (৮ উইকেটে) করেছি, এত রান তাড়া করতে গেলে তো ১০০-১৫০ রানে অল আউট হয়ে যাওয়ার কথা। এই যে ৩৩৩ করেছি অনেক বড় অর্জন।’
৮ . ‘(বার্মিংহামে) ভারতের সঙ্গে আসেন না, কোনটা খারাপ খেলেছি? ভারতের সঙ্গে চিন্তা করেন, ওই ক্যাচ যদি মিস না হতো, যদি ধরে ফেলত তামিম—সব বদলে যেত! আমাদের একটা ক্যাচে সব শেষ হয়ে যাচ্ছে অথচ দল ভালো খেলছে। ভারতের সঙ্গে ২৮৫ করেছি, বুমরা-ভুবনেশ্বরদের তো ভয় পাইনি, ভালো খেলে আসছে ওরা।
খারাপ কই দেখলেন, খারাপ খেলেনি আমাদের দল। যারা খেলা বোঝে তাদের জিজ্ঞেস করেন। শুধু পাকিস্তানের সঙ্গে পারফরম্যান্স পছন্দ হয়নি। এটার অনেক কারণ ছিল। দলের নির্বাচন ঠিক ছিল না। মানসিকভাবে উজ্জীবিত ছিল না। সেমিফাইনালে যেতে পারবে না তাই ওদের কাছে হয়তো মনে হয়েছে অর্থহীন ম্যাচ! সব ম্যাচ জিততে পারিনি আমরা। কিন্তু ভালো খেলেছি।’