সাকিবের এ বিশ্বকাপ যেন রূপকথার গল্পের মত। একটার পর একটা রেকর্ড করেই চলেছেন। এরই মধ্যে টানা দুটি সেঞ্চুরি করেছেন ও সাথে আছে তিনটি ফিফটি। এখন পর্যন্ত রেকর্ডময় সাকিবের পাশে যোগ হয়েছে যুবরাজ সিংয়ের রেকর্ড ছোয়ার স্বাদ। এক ম্যাচে ফিফটি এবং ৫ উইকেট নেওয়া একমাত্র ক্রিকেটার ছিলেন যুবরাজ সিং আর ঠিক তার সদ্য অবসরে যাওয়ার পরেই তার নামের পাশে দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে এমন কীর্তি করে দেখালেন সাকিব আল হাসান।
শীর্ষ রান সংগ্রাহকের তালিকায় দারুনভাবে পাল্লা দিচ্ছেন ওয়ার্নার ফিঞ্চের সাথে। ৬ ম্যাচে করেছেন ৪৭৬ রান। বল হাতেও তার সাফল্য কম কি। এর মধ্যেই ১০ উইকেট নেওয়া হয়ে গেছে তার। বিশ্বকাপে সাকিব যে ভালো করবেন সেটা তার আইপিএল ক্ষুধাতেই বুঝা যাচ্ছিলো, কিন্তু তিনি যে এই ‘ভালো’কে ইতিহাসের অংশ বানিয়ে ফেলবেন, সেটি হয়তো অনেকেই ভাবেননি। বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা অলরাউন্ডার হতেও সাকিবের বেশি দেরি নেই!
সেরাদের সেরা হতে গেলে সাকিবের কি করতে হবে দেখা যাক –
বিশ্বকাপের ইতিহাসে ন্যূনতম ১০ উইকেট ও ২৫০ রান করা খেলোয়াড়দের তালিকায় যাঁরা আছেন, সাকিবের উইকেট সংখ্যা এর মধ্যেই সবার চেয়ে বেশি। ৩৩ উইকেট নিয়ে সাকিব আছেন সবার ওপরে। সাকিবের নিচে আছেন যথাক্রমে কপিল দেব (২৮ উইকেট), মার্ক ওয়াহ ও সনাৎ জয়সুরিয়া (২৭ উইকেট), জ্যাক ক্যালিস (২১ উইকেট), যুবরাজ সিং (২০ উইকেট), তিলকারত্নে দিলশান (১৮ উইকেট), স্কট স্টাইরিস (১৭ উইকেট), অরবিন্দ ডি সিলভা (১৬ উইকেট), ক্রিস গেইল ও স্টিভ টিকোলো (১৫ উইকেট), স্যার ভিভ রিচার্ডস ও সৌরভ গাঙ্গুলী (১০ উইকেট)। বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে সাকিব ছাড়া এ তালিকায় আছেন শুধু গেইল। তাই বলা যায়, এ ক্ষেত্রে সাকিব একদমই ধরাছোঁয়ার বাইরে।
বিশ্বকাপে ন্যূনতম ১০ উইকেট আর ২৫০ রান করা খেলোয়াড়দের তালিকায় সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহকারীদের মধ্যে ১ হাজার ১৬ রান নিয়ে সাকিবের অবস্থান ষষ্ঠ। প্রথমে আছেন ক্রিস গেইল (১ হাজার ১৭৯ রান), জয়সুরিয়া (১ হাজার ১৬৫ রান), এরপর যথাক্রমে আছেন জ্যাক ক্যালিস (১ হাজার ১৪৮ রান), তিলকারত্নে দিলশান (১ হাজার ১১২ রান) ও অরবিন্দ ডি সিলভা (১০৬৪ রান)।
অর্থাৎ, আর মাত্র ১৬৩ রান করলেই ক্রিস গেইলকে টপকে বিশ্বকাপের ইতিহাসে অলরাউন্ডারদের অলরাউন্ডার হয়ে যাবেন সাকিব। হাতে আছে আর দুইটি ম্যাচ আর সেমি নিশ্চিত হলে আরো একটি বা দুইটি ম্যাচ পাবে সাকিব। অর্থাৎ সাকিবকে যদি এ বিশ্বকাপেই রেকর্ডটা ভাঙতে হয় তাহলে তাকে ভাঙতে হবে গেইলের রেকর্ড। কারণ আফগানিস্তানের সাথে উইন্ডিজের একটি ম্যাচ এখনো বাকি আছে। সে ম্যাচে গেইল কত রান করবে তা আগে থেকে জানা যাচ্ছে না।
ব্যাট হাতে চূড়ান্ত ফর্মে থাকা সাকিব কি পারবেন এই বিশ্বকাপেই অলরাউন্ডারদের অলরাউন্ডার হতে নাকি তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো চারটি বছর।
যেভাবে সাকিব এগোচ্ছেন, এই রেকর্ড যদি সাকিব নিজের করে না নিতে পারেন এই বিশ্বকাপে, সেটাই হবে আশ্চর্যের বিষয়।