5.9 C
New York
Friday, March 29, 2024

Buy now

ভারতীয় দলে গৃহযুদ্ধ, কোচিং স্টাফসহ পুরো দল দুইটি অংশে বিভক্ত

বিশ্বকাপে লিগ পর্যায়ের খেলা চলাকালীন সময়ে পাকিস্তান দলের বিরোধের কথা সংবাদ মাধ্যমে এসেছিল। এবার জানা গেলো আরো গেলো আরো এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পাকিস্তান দলের ন্যায় ভারতীয় দলেও বিরোধ। দলের ক্রিকেটাররা দুই ভাগে বিভক্ত। যার একটি অংশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক বিরাট কোহলি আর অন্য একটি অংশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সহঅধিনায়ক রোহিত শর্মা। ভারতীয়সংবাদ মাধ্যম ‘জাগরণ’ এমনই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

সংবাদ মাধ্যমটির প্রকাশিত খবর অনুসারে ভারতীয় দলে কোহলির পক্ষে থাকা ক্রিকেটারদের খারাপ পারফরম্যান্স সত্বেও দলে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা কোহলির সঙ্গে নেই তাদের দেওয়া হচ্ছে না পর্যাপ্ত সুযোগ।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ভারতীয় ক্রিকেট দল এখন দুই দলে বিভক্ত। এক দলে রয়েছেন অধিনায়ক কোহলি নিজে অন্য দলে রোহিত শর্মা। কোহলি-রোহিতের বোঝাপড়ায় সমস্যা হওয়ার খবর অবশ্য নতুন কিছু না। এর আগেও তাঁদের বনিবনা না হওয়ার খবর চাউর হয়েছে সংবাদমাধ্যমে।

এবারের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রোহিতের দলের তুলনায় কোহলির দলের খেলোয়াড়েরাই জাতীয় দলে বেশি নিরাপদ। লোকেশ রাহুলকে খেলানো নিয়ে পক্ষপাতিত্ত্বের অভিযোগ উঠেছে। তেমন ভালো করতে না পারলেও এ ব্যাটসম্যানকে নিয়মিত সুযোগ দেওয়া হচ্ছে জাতীয় দলে। এ ছাড়া হেড কোচ রবি শাস্ত্রী আর বোলিং কোচ ভরত অরুনের ওপরও নাকি নাখোশ দলের বেশ কজন ক্রিকেটার।

জাগরণের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজয় শংকর ব্যাটিং অর্ডারে চারে নামার পর দলের মধ্যে গুঞ্জন উঠেছিল, অম্বতি রাইড়ুর সঙ্গে কী সমস্যা? কিন্তু কেউ এ নিয়ে গলা উঁচু করার সাহস পায়নি। কোচ রবি শাস্ত্রী আর অধিনায়ক কোহলি নাকি দলের ওপর নিজেদের অনেক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করার সাহস কারও নেই। কারণ সবাই জানে, সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক নিযুক্ত বিসিসিআই–প্রধান বিনোদ রাইয়ের সঙ্গে কোহলির মতের খুব একটা পার্থক্য নেই। আর বিসিসিআইয়ের বাকি তিন প্রশাসকের নাকি দলের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলার পর্যাপ্ত ক্ষমতাও নেই। এমএসকে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিও শাস্ত্রী ও কোহলিকে কোনো ব্যাপারে থামাতে পারছেন না। আর ঠিক এসব কারণেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে হারের পর কোহলির সঙ্গে মতের মিল না পড়ায় কোচ পদ থেকে সরে যেতে হয়েছিল অনিল কুম্বলকে।

প্রতিবেদনে খেলোয়াড় নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলা হয়েছে এরপরই। ভারতীয় দলে টিকতে হয় রোহিত শর্মা ও জাসপ্রিত বুমরার মতো ধারাবাহিক পারফরমার হতে হবে, নয় তো কোহলির দলে যোগ দিতে হবে। দল এখন দুটি গ্রুপে বিভক্ত—একটি সহকারী অধিনায়ক রোহিতের আরেকটি অধিনায়ক বিরাটের অধীনে। তবে দুই সিনিয়র ক্রিকেটারের এ বিরোধ এখনো সেভাবে আলোচনায় উঠে আসেনি। কোহলি-ঘনিষ্ঠ ক্রিকেটাররা দলে কতটা সুযোগ পেয়ে থাকেন তা লোকেশ রাহুলকে দিয়ে উদাহরণ টেনেছেন ভারতীয় দলের এক ক্রিকেটার। জাগরণের প্রতিবেদককে বিশ্বকাপ চলাকালে সেই ক্রিকেটার নাকি বলেছেন, ‘রাহুল যত খারাপই করুক, তবু সে দলে ফিরবেই। ওপেনিংয়ে সুযোগ থাকলে, তাদের (কোহলি-ঘনিষ্ঠ) সেখানে খেলানো হবে, চারে সুযোগ থাকলে সেখানেও খেলানো হয় আর যদি কোনো সুযোগই না থাকে, তাহলে ১৫ সদস্যের দলে থাকবে। কেউ চোট পেলে কিংবা বাজে পারফর্ম করলে ফেরানো হয় একাদশে।’

শুধু তা–ই নয়, কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চাহালের মধ্যে যে স্পিনারই বাজে পারফর্ম করুক না কেন, একাদশ থেকে বাদ পড়তে হয় কুলদীপকে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে কোহলির অধীনে চাহালের খেলাই নাকি তার কারণ। অম্বতি রাইড়ুর সুযোগ না পাওয়া নিয়েও কানাঘুষা চলছে দলের মধ্যে। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের নিউজিল্যান্ড সফরে চারে নেমে বেশ ভালো পারফর্ম করেছিলেন রাইড়ু। তখন আলোচনা উঠেছিল চার নম্বরে রাইড়ুই যোগ্য। কিন্তু আইপিএলের আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাটিতে সিরিজের প্রথম তিন ওয়ানডেতে রাইড়ু ভালো না করায় তাঁকে বাদ দেওয়া হয় বিশ্বকাপ দল থেকে। সেমিতে ভারত কিন্তু সেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই হেরেছে, মাত্র ৫ রান তুলতে টপ অর্ডারের তিনজনকে হারিয়েছিল ভারত। চারে রাইড়ুকে দরকার ছিল, এমনটাই বলা হয়েছে সে প্রতিবেদনে।

ভারতীয় দলের সেই ক্রিকেটার প্রতিবেদককে আরও জানিয়েছেন, অধিনায়ক রাইড়ুকে কখনোই পছন্দ করেননি। চার নম্বরে বিজয় শংকরকে তুলে এনেছেন কোহলি। এমনকি শিখর ধাওয়ান ও বিজয় শংকর চোট পাওয়ার পরও রাইড়ুকে বিবেচনা করা হয়নি। ঠিক এ কারণেই নাকি অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন রাইড়ু।

কোচ ও অধিনায়কের সঙ্গে বাকি ক্রিকেটারদের সমস্যা নিয়েও বিস্ফোরক তথ্য জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটার কোচিং স্টাফের প্রস্থানের অপেক্ষায়। প্রতিবেদককেই দলের এক ক্রিকেটার প্রশ্ন করেছেন, তারা কবে যাবে? বিরাট ভাই ব্যাট হাতে দুর্দান্ত করছে কিন্তু এসব কোচ (হেড ও সহকারী কোচ) আর বোলিং কোচ যাবে কবে? ভারতের হেড কোচ ও সহকারী কোচের মেয়াদ আরও ৪৫ দিন বাড়ানো হয়েছে। হেড কোচ রবি শাস্ত্রী ও বোলিং কোচ ভরত অরুন অন্তরঙ্গ বন্ধু। কোহলি তাঁদের বেশ মান্য করেন। এসব নিয়ে বিভেদ সৃষ্টি হওয়াতেই বিশ্বকাপে সবার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি ভারত—এমন ইঙ্গিতই করা হয়েছে প্রতিবেদ

Related Articles

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
3,913FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

Latest Articles