অনেকের কাছেই ক্যান উইলিয়ামসনকে রান আউট করার সুযোগ হাতছাড়া করাটাকেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম হারের লক্ষণ হিসেবে দেখছে। আর এর ভিলেন হিসেবে ভাবা হচ্ছে মুশফিককে। কিন্তু আদতে মাশরাফি বললেন ভিন্ন কথা। তার মতে মুশফিকের ভুল নয়, ব্যাট হাতে দলের ব্যর্থতাই হারের কারণ।
তিনি আরো ও বলেন, ‘রান আউট করতে ব্যর্থ হওয়ার আগে ব্যাট হাতে নেমে মুশফিক নিজেও হয়েছেন রান আউটের শিকার। সাকিব আল হাসানের সাথে ভুল বোঝাবুঝিতে উইকেট খুইয়েছেন সেট হওয়ার পরও। মাশরাফির কাছে সেটিই বাংলাদেশের ম্যাচ থেকে পিছিয়ে পড়ার কারণ।’
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি বলেন, ‘আমাদের ইনিংসের রান আউটটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল। তারা দুজনই (সাকিব ও মুশফিক) উইকেটে সেট হয়ে গিয়েছিল। এমন সময় রানআউট হয়ে গেল। সাকিব-মিঠুন পার্টনারশিপ করার পর সাকিবও আউট হয়ে যায়। এই দুই জুটির একটি ৮০-১০০ হলে দলীয় সংগ্রহ বড় হতে পারত।’
তামিমের ছুড়ে দেয়া বল স্ট্যাম্প বরাবর যাচ্ছিলো ঠিকই। কিন্তু সেই বলটি তাড়াহুড়ো করে ধরতে গিয়ে কনুইয়ের স্পর্শ লেগে বেলটি পরে যায়। আর তাই নিশ্চিত হাতে পাওয়া উইকেটটি হাতছাড়া হয়ে যায়। মুশফিকের এমন ভুলের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ম্যাশ বলেন, ‘বড় স্কোর করতে না পারলে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে হবে। তবে এটা হয়, এটা খেলারই অংশ। কেউ ইচ্ছা করে এমন ভুল করতে চায় না। এখনো আমি মনে করি বড় ভুলটা আমরা ব্যাটিংয়েই করেছি। সেট হয়ে উইকেট বিলিয়ে এসেছি।’
আবেগপ্রবণ মুশফিক নিজের এমন ভুলের পর, কিংবা তাকে নিয়ে সমালোচনা আর বিদ্রূপের প্রভাবে ভেঙে পড়বেন না তো? মাশরাফি অভয় দিলেন, পেশাদারিত্ব থেকেই নিজেকে সামলে নেবেন মুশফিক।
অধিনায়কের ভাষ্য, ‘আমার মনে হয় না মুশফিককে নিয়ে ভাবার কিছু আছে। এটা যে কারো সাথেই ঘটতে পারে। সে খুব চেষ্টা করেছে। বল স্ট্যাম্পের দিকেই যাচ্ছিল, কিন্তু উইকেটরক্ষক হিসেবে এটা বোঝা কঠিন বল স্ট্যাম্পে যাচ্ছে কি না। সে বলটি ধরতে চেয়েছিল, কিন্তু হুট করে কনুই লেগে যায়। এমন ভুল মাঠে হয়েই থাকে। আমি মনে করি না তাকে দোষারোপ করার আছে।’
‘মুশফিক পেশাদার ক্রিকেটার, সে জানে এসব বিষয় কীভাবে সামাল দিতে হয়। এমন তো নয় মুশফিক জীবনে প্রথম ভুল করেছে। যে কেউ সহজ ক্যাচও মিস করে ফেলতে পারে। গত ম্যাচে সৌম্যর হাত থেকে ক্যাচ মিস হয়েছে। সৌম্য কিন্তু এর আগে অনেক কঠিন ক্যাচও ধরেছে।’
রান আউট হাতছাড়া করলেও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমের অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরে প্রশংসার দাবীদার মুশফিক। তার তালুতে বন্দী হয়েই সাজঘরে ফিরেছেন ব্রেন্ডন টেলর, যিনি উইকেটে থাকলে আরও সহজে জয় পেত নিউজিল্যান্ড। মাশরাফি তাই সতীর্থদের প্রশংসা করতেও ভুললেন না, ‘মুশফিকের ক্ষেত্রে এরপরও এমন হতে পারে, খুবই স্বাভাবিক। টেলরের যে ক্যাচটা ধরেছে, গ্র্যান্ডহোমের যে ক্যাচটা ধরেছে- ওগুলোও টার্নিং পয়েন্ট হতে পারত। পরের ম্যাচে সব ঠিকঠাক হলে দেখবেন সব ঠিক হয়ে গেছে।’