হৃদরোগের কারণে দীর্ঘ দিন ধরে মাঠের ক্রিকেটের বাইরে রয়েছেন পাকিস্তানের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার আবিদ আলি। তবে ভালোবাসার জায়গা থেকে আবারও ক্রিকেটে ফিরতে মুখিয়ে আছেন ৩৪ বছর বয়সী এ পাকিস্তানি ব্যাটার।
ইতিমধ্যেই আবিদ পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) মেডিকেল টিমের তত্ত্বাবধানে লাহোরে ন্যাশনাল হাই পারফর্ম্যান্স সেন্টারে অনুশীলন শুরু করেছেন। পিসিবির মেডিকেল দলের পুনর্বাসন পরিকল্পনা শেষে তিনি এখন মাঠের খেলার অপেক্ষা প্রস্ততি করছেন নিজিকে।
২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) পাকিস্তানের প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতা কায়েদ-এ-আজম ট্রফিতে সেন্ট্রাল পাঞ্জাবের হয়ে ব্যাট করার সময় বুকে ব্যথা অনুভব করেন আবিদ। মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুইবার বুকের ব্যথা অনুভব করায় দ্রুতই নেওয়া হয় হাসপাতালে। সেখানে তার হৃদযন্ত্রে অ্যাকিউট করোনারি সিনড্রোম নামক সমস্যা ধরা পড়ে।
সে দিনের কথা মনে করে আবিদ আলি বলেছেন, ক্রিকেটে দ্বিতীয় ইনিংস আছে কিন্তু জীবনে সেটা নাই। মহান আল্লাহ আমাকে দ্বিতীয় জীবন দান করেছেন। তার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা যে, আজ আমি এখানে সুস্থ হয়ে বসে আছি।
অনুশীলনের ফেরার পর দেশটির শীর্ষস্থায়ীয় এক গণমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আবিদ আলি বলেন, ‘সে দিন আমি ব্যথা অনুভব করছিলাম এবং অস্বস্তিতে ভুগছিলাম। যার জন্য ব্যাটিংয়ে সমস্যা হচ্ছিল, এটা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। আমি আমার ব্যাটিং পার্টনার আজহার আলির সঙ্গে পরামর্শ করলাম। এরপর আম্পায়ারের অনুমতি নিয়ে মাঠ ত্যাগ করলাম। তখন বমি হচ্ছিল এবং মাথা ঘুরাচ্ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানতাম না যে, আমার হৃদযন্ত্রের সমস্যা আছে। ইসিজি করার পর ব্যাপারটা যখন ধরা পড়লো, তখন আমার হতবুদ্ধি হওয়ার পালা। একজন স্বাভাবিক ব্যক্তির হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া সাধারণত ৫৫ শতাংশ হয়ে থাকে। কিন্তু আমার দেখাচ্ছিল ৩০ শতাংশ। আমার হার্টের একটি বাল্ব ব্লক হয়ে গিয়েছিল।’
পিসিবির মেডিকেল টিম ও ডাক্তাররা মিলে যথাসধ্য চেষ্টা করেছে আবিদ আলিকে সুস্থ করে তুলতে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে আবিদ এখন শুরু করেছেন মাঠে ফেরার লড়াই।
নতুন করে মাঠে ফেরার ব্যাপারে আবিদ বলেন, ‘পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের মেডিকেল দল আমার জন্য পুনর্বাসন পরিকল্পনা করেছিল। আমি যতটা তাড়াতাড়ি পারি ব্যাটটাকে আবার আকড়ে ধরার চেষ্টা করছি। ক্রিকেট আমার জীবন। এটা আমার জীবনের অমূল্য এক প্রতিচ্ছবি। আমি এটাকে ছাড়তে চাই না।’
অনুশীলনে ফেরার পর মাঠে ফেরার ব্যাপারেও আশাবাদী পাকিস্তানের সেরা টেস্ট ব্যাটার। বলেন, ‘আমি যতটা তাড়াতাড়ি পারি ক্রিকেটে ফেরার চেষ্টা করছি। আমি আশাবাদী যে, সর্বশক্তিমানের দান করা এ নতুন জীবন নিয়ে আমি আবার ক্রিকেটে ফিরে আসবো।’