মাশরাফি সে তো এক আবেগের নাম। যে কিনা স্থান করে নিয়েছেন কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমীর হৃদয়ে। মাশরাফির আর এক নাম যোদ্ধা। যে সব সময়ই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পছন্দ করেন। আর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছেন যে নিজের জীবনের সঙ্গে, নিজের ইঞ্জুরির সঙ্গে।
এটা নিশ্চিত যে, বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসরই মাশরাফির ক্যারিয়ারের সর্বশেষ বিশ্বকাপ। আবার এটাও হতে পারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। কিন্তু শেষ ম্যাচের আগে করলেন না কোনো অনুশীলন, আসলেন না সংবাদ সম্মেলনেও। যেখানে অনেক প্রশ্নই ছিলো সংবাদ কর্মীদের।
যখন কেউ ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ খেলে অবশ্যই বিষয়টি অনেক আবেগপ্রবণ একটা ব্যাপার। তাহলে ক্যাপ্টেন কি সে জন্যই আসলেন না সংবাদ সম্মেলনে? না কি মিডিয়ার প্রশ্ন মোটেও পছন্দ হচ্ছে না তার। বিশেষ করে তার ক্যারিয়ারের ইতি টানা প্রসঙ্গে। সেজন্যই কি আজ কোচ স্টিভ রোডস আসলেন সংবাদ সম্মেলনে? সে প্রশ্নের উত্তর এখনো অজানা।
মাশরাফি আগেই বলে দিয়েছেন তার ক্যারিয়ারের ইতি টানার ব্যাপারে।খেলতে চান আরো। অবসরের কথা এখনি ভাবছেন না তিনি। কিন্তু যদি টিম ম্যানেজমেন্ট চায় তাহলে বিষয়িটা অন্য রকম হবে। আর টিম ম্যানেজমেন্ট ও জানিয়ে দিয়েছে যে তারা মাশরাফির প্রতি সম্মান দেখিয়ে তার সিদ্ধান্ত তার উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন।
যদি মাশরাফির এই বিশ্বকাপ টা ভালো যেত তাহলে হয়ত এত গুঞ্জন উঠত না। কিন্তু তিনি যে পুরো ৭ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন মাত্র ১ টি। আর সম্পূর্ণ স্পেলে বল করেছেন ও মাত্র একটি ম্যাচেই।
কিন্তু মাশরাফিকে তার শেষ ম্যাচের আগে খুঁজে পাওয়া গেলো না অনুশীলনে। অনেক খোঁজা খুজির করে দেখা মিলল লডর্সের ব্যালকনিতে।তাও কিছু সময়ের জন্য। যে মাশরাফি কিনা সংবাদ কর্মীদের সঙ্গে আড্ডার ছলেই কথা বললেন তিনিই আজ এড়িয়ে গেলেন তাদের। কিন্তু তার অনুশীলনে না আসার পিছনে যে রয়েছে অন্য কারণ।
আসলে মাশরাফি শতভাগ সুস্থ নন। সবাই জানেন হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি নিয়েই খেলছেন। তবে সেটা কোন মাত্রার হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি? সেটা গ্রেড ‘টু’। যা নিয়ে খেলছেন বিশ্বকাপে। তার জীবনের শেষ বিশ্বকাপ।
এমন ইনজুরি নিয়ে বিশ্বকাপ খেলার প্রশ্নই আসে না। এরকম ইনজুরির প্রথম চিকিৎসা হচ্ছে অন্তত তিন সপ্তাহ পূর্ণ বিশ্রাম; কিন্তু মাশরাফি আর তা নিতে পারলেন কই? ওই যে ইনজুরি নিয়ে খেলার কারণে প্র্যাকটিসেও ম্যুভমেনট কম।
আজ বোলিং, ফিল্ডিং আর ক্যাচিং, এমনকি ফুটবল খেলাতেও দেখা যায়নি মাশরাফিকে। বিশ্বকাপে নিজের জীবনের শেষ ম্যাচের আগে মাশরাফিকে অনুশীলনে না দেখে অবাক হচ্ছেন সবাই।
ভারতের সাথে ম্যাচ হেরে শেষ হয়েছে সেমির স্বপ্ন। ছোট ছোট ভুল না করলে বাংলাদেশ জয় পেতে পারত নিউজিল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে। আরো রঙিন হত এ বিশ্বকাপ। তবে মাশরাফির শেষ বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে দল চাইবে তাকে একটা জয় উপহার দিতে। বিশ্বকাপ যে খুব খারাপ গেছে তা না। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা জয় পেলে বিশ্বকাপ অভিযান টা খুব সুন্দর ভাবেই ইতি টানা হবে ম্যাশ ও বাংলাদেশের। শুক্রবার লর্ডসে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩ঃ৩০ টায় পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।