সব ধরনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন শ্রীলঙ্কার রহস্যময় স্পিনার অজান্তা মেন্ডিস। ক্রিকেটে ক্যারম বলের জনক হিসেবে পরিচিত মেন্ডিসের অবসর কালে বয়স ৩৪ বছর।
লংকান এই স্পিনারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয়েছিল ক্যারিবিয়ানদের মাটিতে ২০০৮ সালে। তিন ম্যাচের সেই সিরিজে নিজের অভিষেক ম্যাচে ৩৯ রানে নেন ৩ উইকেট। তবে পরের দুই ম্যাচে ছিলেন উইকেট শূন্য।
তবে মেন্ডিস নিজেকে জানান দেন একই বছর পাকিস্তানের মাটিতে হওয়া এশিয়া কাপে। সেই আসরের ফাইনালে ভারতের ব্যাটিং অর্ডারকে একাই ধ্বসিয়ে দেন তিনি। সেবার তিনি ক্রিকেট বিশ্বকে তিন আঙ্গুলের মারপ্যাচে তৈরি ক্যারম বলের ম্যাজিকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন।
যার উত্তর ছিলো না ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কাছে। সে ম্যাচে ৮ ওভার বল করে ১ মেডেনসহ মাত্র ১৩ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন মেন্ডিস। আর শ্রীলঙ্কাকে উপহার দিয়েছিলেন এশিয়া কাপের শিরোপা। মাত্র ১৯ ওয়ানডে খেলেই দ্রুততম অর্ধশত উইকেটের মাইলফলক বিশ্বরেকর্ডে নাম লেখান এই লংকান। যা এখনো টিকে আছে।
ওয়ানডের পর টেস্ট অভিষেকেও ঘরের মাটিতে তার ক্যারম বলে ভারতকে নাকানি-চুবানি খাওয়ান তিনি। শ্রীলঙ্কার ২-১ ব্যবধানে জয়ের সিরিজে ২৬টি উইকেট শিকার করেন মেন্ডিস।
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও কম যাননি তিনি। ২০১২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮ রানে নেন ৬টি উইকেট। যা এই ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত সেরা বোলিং রেকর্ড। এছাড়া বিশ্বের একমাত্র বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে দুইবার একই ম্যাচ ৬ উইকেট নেয়ার রেকর্ড রয়েছে তার দখলে।
তবে আস্তে আস্তে ব্যাটসম্যানরা তার ক্যারম বলের রহস্য উন্মোচনের পর মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখেন তিনি। তার উইকেট প্রাপ্তির গ্রাফ নিম্নমুখী হতে থাকে। ফলে দলে জায়গা হারান।
২০১৫ সালে খেলেছেন সবশেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ। ৩৪ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার শ্রীলঙ্কার জার্সিতে ২০০৮ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ১৯ টেস্ট, ৮৭ ওয়ানডে এবং ৩৯ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। সাদা পোশাকে তার ঝুলিতে রয়েছে ৭০ উইকেট, টি-টোয়েন্টিতে মেন্ডিসের শিকার ৬৬ উইকেট। ক্যারম বল দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে সাড়া ফেলা মেন্ডিস এই ফরম্যাটে নিয়েছেন ১৫২ টি উইকেট।