সম্প্রতি ঘোষণা হয়েছে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড। সেখানে জায়গা করে নিয়েছে বহুদিন ধরে অফফর্মে থাকা সৌম্য সরকার ও লিটন দাস। আর তাইতো বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াড নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। শেষ দশ আন্তর্জাতিক ম্যাচে অসাধারণ খেলা ইমরুল কায়েস কেন দলে জায়গা পেলেন না আর ক্রমাগত খারাপ করতে থাকা সৌম্য-লিটন কেন দলে তা যেন ক্রিকেট প্রিয় বাংলাদেশীদের মাথা ব্যথার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে জনগণের মাথা ব্যথা হলেও বিষয়টি যেনো গায়েই মাখননি সৌম্য-লিটনরা। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের খেলাতেও আগের মতোই চলছে তাদের ব্যাট আর বরাবরের তাতে রান নেই সে ব্যাটে!
কিন্তু, বহুদিন ধরেই ভুগতে থাকা রান খরার ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত যেন হুশ হলো সৌম্যের। ০, ১৭, ২, ১, ১৪, ১০, ১২, ২৯, ৪৩, ৩৬-এই ছিল সৌম্যের গত দশ ম্যাচের স্কোর। সমালোচনার জবাব দিতেই কিনা কে জানে অবশেষে ডিপিএলে হাসল সৌম্যর ব্যাট। আজ রুপগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে অলিখিত ফাইনালে দারুন এক ঝড়ো শতকের দেখা পেলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই বাঁহাতি ওপেনার।
আবাহনীর দলনেতা মাশরাফি বিন মুর্তজা জানতেন হারলেই শিরোপা হাতছাড়া, তাই এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে সাভারের তিন নম্বর মাঠে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ‘অলিখিত ফাইনালে’ অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ দিতেই যেন দুই ওপেনার আজ জীবন বাজি নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন।
অনেকটা রিস্ক নিয়েই আগের আট ইনিংসে একটিও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হওয়া সৌম্যকে বেছে নেন মাশরাফি। তবে অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে দুর্দান্ত শুরু করা সৌম্য ৩৯ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন। তবে অর্ধশতক পূরণের পর আরো দুর্দান্ত খেলতে থাকেন সৌম্য। নাবিল সামাদের করা ইনিংসের ২৩তম ওভারের শেষ বলে এক রান নিয়ে শতক পূর্ণ করেন তিনি। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক স্পর্শ করার পথে খেলেন ১৪ চার ও ২ ছক্কার মার।
অন্যদিকে সৌম্যকে সঙ্গ দেয়া ওপেনার উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জহুরুল ইসলাম ৮৩ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন। জহুরুলের ইনিংসে ৬ টি বাউন্ডারি ও ২ টি দৃষ্টিনন্দন ছয়ের মার ছিল।
১৬৯ রানে নাবিল সামাদের বলে সৌম্য আউট হলে এই জুটি ভাঙে। এরপর ওয়ান ডাউনে নামা নাজমুল হোসাইন শান্ত দলীয় ২১১ রানে ২৩ বলে ২৪ রান করে আউট হন। তারপর ব্যাট করতে নামেন ওয়াসিম জাফের। ২ চার ২ ছয়ে ৩৯ বলে ৪৬ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। দলীয় ২২১ রানে ভারতীয় বলার ঋষি ধাওয়ানের বলে ওপেনার জহুরুল আউট হলে সাব্বির রহমান মাঠে নামেন। চার বাউন্ডারি মেরে ২৪ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে তাসকিন আহমেদের বলে আউট হন সাব্বির।
তবে রবিবারের ম্যাচে সৌম্য-জহুরুলের পরে ম্যাচের আরেক নায়ক ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৬ নম্বরে নামা মিঠুন ঝড়ো ফিফটি করেন। মাত্র ৩৪ বল খেলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৬৪ রানের অতিমানবীয় ইনিংস খেলেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত লিজেন্ড অফ রূপগঞ্জের উপর ৭ উইকেটে ৩৭৭ রানের পাহাড়সম চাপ প্রয়োগ করেছে মাশরাফির আবাহনী লিমিটেড। রূপগঞ্জের হয়ে তাসকিন ও শহীদ ২ টি করে এবং সুভাশিস রয়, নাবিল সামাদ ও ধাওয়ান একটি করে উইকেট লাভ করেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছে রূপগঞ্জ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৭.৪ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৮৬ রান তুলতে পেরেছে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া রূপগঞ্জ। ব্যাটিংয়ে হাল ধরেছেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। ৫০ বলে ৪৩ রান করে অপরাজিত আছেন তিনি তার সাথে ১২ বলে ২ রান করে মাঠে আছেন শাহরিয়ার নাফীস।
আবাহনীর হয়ে মাশরাফি ও মিরাজ ২ টি করে উইকেট পেয়েছেন। এবং একটি উইকেট পেয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন।