অনেক জল্পনা কল্পনার পর মাদ্রিদের সূর্যসন্তান বলে খ্যাত ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অবশেষে সত্যিই ছেড়ে দিলেন তার অনেক দিনের পুরোনো ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ। বেশ কিছু দিন ধরে চলতে থাকা গুঞ্জন সত্যি প্রমান করে অবশেষে জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
২০০৯ সালে সেই সময়ের সর্বোচ্চ রেকর্ড ট্রান্সফার ফি ৯৪ মিলিয়ন ইউরোতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেয়া রোনালদো রিয়ালকে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগ সহ দুইটি লা লীগ ট্রফি জিতিয়েছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো দল হ্যাটট্রিক শিরোপা অর্জন করে আর তা হলো রিয়াল মাদ্রিদ। ২০১৪ ও ২০১৭ সালের ফাইনালে গোল করে দলকে শিরোপা এনে দেয়া রোনালদো জিতেছেন পাঁচবার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার।
এছাড়াও রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে মাত্র ৪৩৮ ম্যাচ খেলে রেকর্ড ৪৫১ গোল করা রোনালদো ক্লাবকে ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ক্লাব বিশ্বকাপ জেতানোর পাশাপাশি জিতিয়েছেন আরও অনেকগুলি শিরোপা। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৯ বছর রিয়াল মাদ্রিদে খেলা রোনালদো ক্লাবকে এনে দিয়েছেন মোট ১৬ টি শিরোপা।
স্কোয়াওকা নিউজে প্রকাশিত রিয়াল মাদ্রিদের ১৯২ শব্দের এক বিবৃতিতে জানা যায়, রোনালদোর অনুরোধেই জুভেন্টাসের সাথে দল বদলে সম্মত হয়েছে রিয়াল। তারা বিবৃতিতে আরো বলে, ফুটবল যতদিন থাকবে ক্রিস্টিয়ানো ততদিনই রিয়াল মাদ্রিদের পরবর্তী প্রজন্মগুলোর জন্য এক মহান আদর্শ হয়ে থাকবে এবং রিয়াল মাদ্রিদ রোনালদোর জন্য হয়ে থাকবে আপন ঘর।
জুভেন্টাস জানিয়েছে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ১০০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তিতে চার বছরের জন্য জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছেন। ৩৩ বছর বয়সী রোনালদো ২০২২ সালের জুনের শেষ পর্যন্ত জুভেন্টাসে খেলবেন। রোনালদোর আগে জুভেন্টাসের জন্য সর্বোচ্চ দামি ফুটবলার ছিল আর্জেন্টাইন ফরওয়ার্ড হিগুয়েন। ৯০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ২০১৬ সালে জুভেন্টাস হিগুয়েনকে দলে টেনেছিল।
সতীর্থদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে রোনালদো বিদায় বেলায় বলেন, “মাদ্রিদে মাঠ ও ড্রেসিং রুমে আমি চমৎকার কিছু সতীর্থ আর অবিশ্বাস্য সব সমর্থকদের উষ্ণতা অনুভব করেছি। একটানা তিন বছর চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতেছি আমরা। এবং, চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতেছি পাঁচ বছরে। রিয়াল মাদ্রিদ জয় করেছে আমার ও আমার পরিবারের হৃদয়।”
সাধারণভাবে একটি কথা না বললেই নয় যে, রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসে রোনালদো ব্যাতিত আর কোনো প্লেয়ার এককভাবে এতটা সফলতা দেখতে পারেননি। এখন একটি বিশাল প্রশ্ন আপনার মনে জাগতেই পারে, রোনালদোর জায়গায় রিয়াল মাদ্রিদে তাঁর সমমানের অন্য কোনো খেলোয়াড় আর কখনো কি আসবেন?