এই তো বেশ কিছু দিন আগে প্রায় কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মায়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচারের শিকার হয়ে নিজেদের জীবন বাঁচানোর তাগিদে পাড়ি জমায় বাংলাদেশে। একে তো রোহিঙ্গারা দেশান্তরী, তার উপর তাদের নাই কোনো নিরাপদ বাসস্থান কিংবা নিরাপদ খাবার ব্যবস্থা। এ যেন পৃথিবীর বুকেই নরকের স্বাদ গ্রহণ করা।
তাই এবার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য চেয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তিনি তার ভেরিফায়েড ফেইবুক পেজে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং নিজের সন্তানদের ছবি পোস্ট করেছেন।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন রোহিঙ্গা তার একটি ছোট বাচ্চাকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আপাত দৃষ্টিতে ছবিটি বাস্তবিক অর্থ হয়তো খুব একটা মানে রাখার মতো না। কিন্তু যদি আমরা প্ৰেক্ষাপটগুলি চিন্তা করি এবং ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করি তাহলে বুঝতে পারব কতটা অসহায় ও কাতর চোখে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। সাদা-কালো এই ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, সন্তান কোলে দাঁড়িয়ে থাকা এক বাবার চোখেমুখে অনিশ্চয়তার ছাপ। একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে স্বাস্থ্য ক্যাম্পটি অবস্থান করছে। সেই বাবার পিছনে আরো কয়েকজন মহিলা দাঁড়িয়ে আছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর স্বাস্থ্য ক্যাম্পে সবাই চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাদের সবার মনেই এখন হতাশার করুন মেঘ ছেঁয়ে গেছে। আদো তারা জানেই না তারা কি আবার কখনো তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবে কিনা।
সাদা কালো এই ছবিটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দাতব্য কাজে অসহায়দের সহায়তায় প্রচুর টাকা ব্যায় করা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তাকে ২০১৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে পরোহিতকর ক্রীড়া-ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল।সেই ছবির পাশাপাশি নিজের চার সন্তানের ছবিও পোস্ট করেছেন পর্তুগিজ তারকা। দেখলে মনে হয়, একজন রোহিঙ্গার সন্তান আর রোনালদোর সন্তানদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই! সেই পোস্টে রোনালদোর লেখা পড়লেও কিন্তু এটাই মনে হয়!
তাছাড়া এই ছবি দুটির উপরে আবার দাতব্য সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর একটি লিংক যোগ করেছেন। সেখানে ‘ক্লিক’ করলে সেই ছবির বাবা (সাইফ) এবং তাঁর দেড় বছর বয়সী ছেলের (শফিক) পরিচয় মেলে। পাশে লেখা, মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন প্রদেশে লোমহর্ষক আগ্রাসন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় সাড়ে ছয় লাখ শিশু ও পরিবারের অংশ ওরা দুজন। এই বিশাল আকারের রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে সাহায্য চাওয়া হয়েছে।
রোনালদো এই সাহায্য প্রার্থনার লিংক নিজের ফেসবুক পেজজুড়ে দিয়ে লিখেছেন, ‘একটাই পৃথিবী, যেখানে আমরা নিজেদের সন্তানকে ভালোবাসি। দয়া করে সাহায্য করুন।’