দীর্ঘ পাঁচ বছর পর মুখোমুখি বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় ফুটবল দল। স্বভাবতই কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে এই ম্যাচকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বয়ে গেছে দুই দেশের ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে বিক্রি হয়ে গিয়েছিলো আশি হাজার টিকিট।
তবে চরম উত্তেজনাকর ম্যাচটিতে জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত সমতা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো ফুটবল প্রিয় মানুষগুলোকে। প্রথম দিকে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকলেও আটাশি মিনিটে গোল খেয়ে ম্যাচ জয়ের আশা হতাশায় পরিণত হলো বাংলাদেশের টাইগারদের। আবারো সেই ১-১ গোলের ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো দুই দেশকে।
দক্ষিণ এশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলের শক্তি একসময় কাছাকাছি থাকলেও গত কয়েক বছরে অনেক এগিয়ে গেছে ভারতের ফুটবল। সেই তুলনায় বাংলাদেশ উন্নতি করতে পারেনি। তবে জেমি ডে কোচ হওয়ার পর থেকে আবারও লড়াকু বাংলাদেশকে দেখা যাচ্ছে।
প্রথমার্ধে ১-০ গোলে শেষ করে বাংলাদেশ-ভারত। জামাল ভুঁইয়ার ফ্রি কিকে হেড করে বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র গোল করেন সাদউদ্দিন।
আজ ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেও শুরু থেকেই জামাল ভূঁইয়াদের লড়াকু চেহারায়ই দেখা যায়। ডিফেন্ডাররা দারুণভাবে গোলমুখ আগলে রেখেছেন। গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানাও বেশ কয়েকটি সেভ করেন।
ম্যাচের ৩৪ মিনিটে তো ভারতের ডানদিক থেকে নেয়া শট এক হাতে বারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন রানা, যেটি চোখের পলকে গোল হয়ে যেতে পারতো।
র্যাংকিংয়ে ৮৩ ধাপ এগিয়ে থাকা ভারত দাপট দেখিয়েই খেলছিল। তবে বাংলাদেশও সুযোগ তৈরি করেছে। সেই সুযোগেরই একটি কাজে লাগিয়ে ম্যাচের ৪১ মিনিটে সল্টলেক স্টেডিয়ামকে স্তব্ধ করে দেয় বাংলাদেশ।
অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার দুর্দান্ত এক ফ্রি কিক বক্সের মধ্যে পেয়ে মাথা ছুঁইয়ে দেন সাদ উদ্দিন। ভারতীয় গোলরক্ষক সেটি বুঝে ওঠার আগেই জড়িয়ে যায় জালে। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ওই ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করেছে জেমি ডে’র শিষ্যরা।
এরপর বিরতি শেষে মাঠে নেমে দুর্দান্ত খেলে বাংলাদেশ। এ সময় অনেকবার গোলের সম্ভাবনা জাগিয়েও গোল করতে পারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচের ৮৮ তম মিনিটে বাংলাদেশের জালে বল পাঠায় ভারত। শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র হয় ম্যাচ।
প্রায় পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে ফুটবলে মুখোমুখি হয়নি বাংলাদেশ ও ভারত। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে দেশ দুটি শেষবার মুখোমুখি হয়েছিল। আর দুটি ম্যাচই ১-১ ও ২-২ গোলে ড্র হয়। কিন্তু র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থানের তেমন কোনো পরিবর্তন না হলেও এই পাঁচ বছরে ভারত ফুটবলে অসাধারণ পরিবর্তন এনেছে। সেসময় ভারত ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ১৭১ নম্বর স্থানে থাকলেও এখন আছে ১০৪ এ। আর বাংলাদেশের অবস্থান ১৮৭ নম্বরে।
বাংলাদেশ একাদশঃ গোলরক্ষক : আশরাফুল ইসলাম রানা, ডিফেন্ডার : রহমত মিয়া, ইয়াসিন খান, রিয়াদুল হাসান, রায়হান হাসান, মিডফিল্ডার : জামাল ভূঁইয়া, বিপলু আহমেদ, সোহেল রানা, ফরোয়ার্ড : সাদ উদ্দিন ও নাবিব নেওয়াজ জীবন।