নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদের কাছে বাস পার্ক করে ক্রিকেটাররা মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় এক মহিলা সন্ত্রাসী হামলার ব্যাপারে তাদের সতর্ক করলে তারা দ্রুত বাসে ফিরে আসেন।
ক্রাইস্টচার্চে টিম হোটেলে বসে সেই ভয়াবহ ঘটনারই বর্ণনা দিয়েছিলেন টিম ম্যানেজার খালেদ মাসুদ পাইলট।
খালেদ মাসুদ বলেন, “আমরা ভাগ্যবান, বাসে আমরা অনেকজন ছিলাম, ১৭ জনের মতো। এর মধ্যে সৌম্য সরকারও ছিল। আমরা সবাই নামাজ পড়তে যাচ্ছিলাম। দুইজন (নাঈম হাসান ও লিটন দাস) শুধুমাত্র হোটেলে ছিল, বাকি সবাই আমাদের সঙ্গেই ছিল। আমরা খুবই কাছে ছিলাম। মসজিদ আমরা বাস থেকেই দেখতে পাচ্ছিলাম। আমরা হয়তো ৫০ গজ দূরে ছিলাম। আমি বলব আমরা খুবই ভাগ্যবান, আর যদি তিন চার মিনিট আগে চলে আসতাম তাহলে আমরা মসজিদেই হয়তো থাকতাম।’
সেই ভয়াবহ মুহূর্তে ক্রিকেটারদের অনেকেই কান্না করছিলেন বলে জানান মাসুদ, ‘আমি খেলোয়াড়দের দেখেছি বাসের মধ্যে, অনেকেই কান্নাকাটি করছিল, কি করতে পারে, কীভাবে কি করলে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। এটা খুবই কঠিন। সবার ওপরেই মানসিক প্রভাব ফেলে। এটা খুবই স্বাভাবিক। যেকোনো মানুষেরই ভেঙে পড়ার কথা।’
বাসে বসে দেখা ভয়ংকর মুহূর্তগুলো কিছুতেই ভুলতে পারছেন না জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক, ‘বাস থেকেই দেখতে পাচ্ছিলাম আমরা মানুষ রক্তাক্ত অবস্থা বেরিয়ে আসছে। আমরা প্রায় ৮-১০ মিনিট বাসেই ছিলাম। সবাই মাথা নিচু করে ছিলাম যদি কোনো কারণে গুলি হতে থাকে।
পরে যখন বুঝলাম যে অস্ত্রধারীরা যদি বাইরে এসে এলোপাথাড়ি গুলি শুরু করে, তখন বাসের মধ্যে একসঙ্গে অনেককে পাওয়া যাবে, ঘটনার তীব্রতা আরও বেড়ে যাবে। তাই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম যে পেছন দিক দিয়ে যে গেট আছে, সবাই গেট দিয়ে বের হয়ে যাবো।
তারপরই আমরা পার্কের মধ্য দিয়ে হেঁটে-দৌড়িয়ে চলে গেলাম ড্রেসিংরুমের ভেতরে। এরপর বেশ কিছুক্ষণ আমরা ড্রেসিংরুমের মধ্যেই ছিলাম। আলোচনা হচ্ছিলো কীভাবে আমরা এখান থেকে বেরিয়ে যেতে পারি।
আমার মতে খেলোয়াড়রা তখন সেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে বাস থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। পরে যখন আমরা ভিডিও দেখলাম, দেখতে পেলাম যে বাইরে এসেও গুলি করছিল।”