ক্রিস গেইলের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও চতুর্থ ওয়ানডেতে হারের মুখ দেখলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথমে ব্যাট করে ইংলিশদের করা ৪১৮ রানের জবাবে ৪৮ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়ে যায় ৩৮৯ রানে৷ ২৯ রানের জয় পায় রুটরা। এতে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ইংল্যান্ড৷ গ্রস ইসলেটে আগামী ২ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে।
গ্রানাডায় টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংসের শুরুতে ইংল্যান্ডকে ১০০ রানের সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও অ্যালেক্স হেলস। বেয়ারস্টো ৫৬ রানে থামলেও সেঞ্চুরির দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন হেলস। তবে ৭৩ বলে ৮২ রান করে আউট হন তিনি। তবে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক জো রুট। করেন ৫ রান।
টপ-অর্ডারের এই তিন ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের উপর চড়াও হন মরগান ও বাটলার। চতুর্থ উইকেট জুটিতে সেঞ্চুরি করেন তারা। ১২৪ বলে ২০৪ রানের জুটি গড়েন মরগান ও বাটলার। এরমধ্যে মরগান ৫৯ বলে ৮৪ ও বাটলার ৬৫ বলে ১১৪ রান করেন।
জুটিতে সেঞ্চুরি না হলেও ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১২ সেঞ্চুরি তুলে নেন মরগান। ৮টি চার ও ৬টি ছক্কায় ৮৮ বলে ১০৩ রান করেন মরগান। তবে ক্রিজে থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের উপর তান্ডব করেছেন বাটলার। ১৩টি চার ও ১২টি ছক্কায় ৭৭ বলে ১৫০ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি। এতে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৪১৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড।
এই নিয়ে চতুর্থবারের মত চারবার চারশ রানের দলীয় সংগ্রহ দাঁড় করালো ইংল্যান্ড। এই ইনিংসে ২৪টি ছক্কা মারেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। যা বিশ্বরেকর্ড।
ইংলিশদের দেওয়া ৪১৯ রান তাড়া করেত নেমে দলীয় ৪৪ রানের মধ্যে ক্যাম্পবেল ও শাই হোপের উইকেট হারিয়ে বসলেও ক্রিস গেইলের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের ভর করে উপয়ুক্ত জবাব দিতে থাকে৷
ড্যারেন ব্রাভোকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে গেইল যোগ করেন ১৭৬ রান৷ ব্র্যাভো চারটি বাউন্ডারি ও চারটি ছক্কার সাহায্যে ৫৯ বলে ৬১ রান করে আউট হন৷ হেটমায়ার ৬ রানের বেশি সংগ্রহ করতে পারেননি৷
এক প্রান্ত আঁকড়ে গেইল রীতিমত তান্ডব লীলা চালাতে থাকেন৷ ৩টি চার ও ৫টি ছক্কা সাহায্যে ৩২ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন গেইল৷ ৫৫ বলে শতরানের গণ্ডি টপকাতে গেইল সাহায্য নেন ৭টি চার ও ৯টি ছক্কার৷ ১১টি বাউন্ডারি ও ১৩ টি ছক্কার সাহায্যে ৮৫ বলে দেড়শো রানের সীমা ছুঁয়ে ফেলেন দ্য ইউনিভার্স বস৷ শেষমেষ ১১টি চার ও ১৪টি ছক্কার সাহায্যে ৯৭ বলে ১৬২ রান করে আউট হন তিনি৷ একই সাথে এদিন তিনি ওয়ানডে ক্রিকেটে দশ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছে যান।
গেইল আউট হওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে যথাযথ টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন হোল্ডার, ব্রাথওয়েট, নার্সরা৷ তবে জয়ের দোরগোড়ায় এসে এক ওভারের ভুল-ভ্রান্তিতে যবনিকা পড়ে যায় ক্যারিবিয়ান ইনিংসে৷ ৪৮তম ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে আদিল রশিদ আউট করেন অ্যাশলে নার্স (৪৩) ও কার্লোস ব্রাথওয়েটকে (৫০)৷ একই ওভারেই পঞ্চম ও ষষ্ঠ বলে দেবেন্দ্র বিশু (০) ও থমাসকে (০) সাজঘরে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে দাড়ি টেনে দেন আদিল রশিদ৷
এক ওভারে চারটিসহ ৮৫ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন রশিদ। তবে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ইংল্যান্ডের বাটলার। নিজেদের ইনিংসে ২২টি ছক্কা মারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড ২৪টি। দুই দল মিলিয়ে এ ম্যাচে ছক্কা হয়েছে ৪৬টি। যা ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ছক্কার বিশ্বরেকর্ড।