যখন অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন, চেহারায় ছিল শঙ্কার ছায়া আর ক্রিকেটপ্রিয় দেশবাসীকে রেখেছিলেন চরম উৎকণ্ঠায় তবে সাকিব আল হাসান ফিরলেন হাসি মুখেই। আর রোববার দুপুরে দেশে ফিরেই বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমকে শোনালেন আশার কথা। জানালেন আঙুলে শক্তি ফিরলে আগামী মাসেও মাঠে ফিরতে পারেন তিনি।
এশিয়া কাপের মাঝখান থেকে দেশে ফিরতে বাধ্য হওয়া সাকিব ঢাকার একটি হাসপাতালে সাময়িক চিকিৎসা নিয়েছিলেন চোট পাওয়া আঙুলে সংক্রমণ হওয়ায় কারণে। তার পর অস্ট্রেলিয়া যান গত ৫ অক্টোবর রাতে। প্রায় এক সপ্তাহ মেলবোর্নের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন আর এই সময়টাতেই চরম উৎকণ্ঠায় ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রিয় মানুষগুলো এবং তিনি আর ক্রিকেট খেলতে পারবেন নাকি পারবেননা এই বিষয়ে বাতাসে ভেসেছে অনেক গুঞ্জন।
তবে সাকিব জানালেন মাঠে ফেরার সম্ভাব্য সময় সুনিশ্চিত করে না জানলেও, ভাগ্য যদি সহায় থাকে তবে মাঠে ফিরতে পারেন অনুমিত সময়ের আগেই।
“এটা আসলে এমন একটি সমস্যা, যেটি ঠিক হওয়ার কোনো টাইম ফ্রেম নেই। হতে পারে যে সামনের মাসেও খেলতে পারি। এখন হাতে ব্যথা নেই, খুব ভালো অনুভব করছি। গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, হাতের শক্তি কতক্ষণে ফিরে আসে। রিহ্যাবের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে পারে। যদি আসে, তাহলে সামনের মাসেও খেলে ফেলতে পারি।”
পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষে জানা যাবে কতদিন লাগতে পারে সাকিবের মাঠে ফিরতে। তবে মাঠে ফেরার পর যদি ব্যথা আবার ফিরে আসে তাহলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে।
“রিহ্যাবের পর যদি ব্যথা অনুভব করি, তাহলে আবার অপেক্ষা করতে হবে যে কখন সার্জারি করাতে পারব। এটা আসলে অনিশ্চিত। একটা ভালো ব্যাপার যে ইনফেকশন হওয়ার পর এটা (ব্যথা) অনেক কমে গেছে। ব্যথা না থাকলে সার্জারি ছাড়াই খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। সেটা যদি হয়, তাহলে এর চেয়ে ভালো কিছু আর হয় না।”
“তবে নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। এজন্যই বললাম যে এক মাস পরও খেলতে পারি, আবার ৬ মাসও লাগতে পারে। আশা করি, এক মাস পরই পারব। এরপরও যেহেতু শক্তি ফিরে আসার ব্যাপার আছে, এক মাসের চেয়ে একটু বেশিও লাগতে পারে।”
অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে ইনফেকশনের ব্যাপারে এখানকার ডাক্তাররাই বলে দিয়েছিলেন সংক্রমণ না সেরে ওঠা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার করা যাবে না। তবে ফেরার পর সাকিব দুটি বিষয় নিয়েই সুখবর শোনালেন।
“ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে প্রতি সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে দেখতে হবে এটা বাড়ল কিনা বা নতুন কোনো সমস্যা হলো কিনা। তবে এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আছে।”
“সার্জারি ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে করা যাবে না। কারণ সংক্রমণ যদি হাড়ের ভেতরে থাকে, তাহলে সেটা সারার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওখানে রক্ত যায় না। এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্যই ৬ থেকে ১২ মাসের ভেতর সার্জারি করা যাবে না। তবে ভালো দিক হচ্ছে, সার্জারি না করেও খেলা সম্ভব হতে পারে। আমি বলুন আর ফিজিওর পরামর্শ, ওই দিক নিয়েই এখন চিন্তা করা হচ্ছে যে সার্জারি ছাড়া কিভাবে খেলা যায়।”
সাকিব দলে না থাকলে দলকে ভুগতে হয় প্রবলভাবে আর সামনেই তো জিম্বাবুয়ে সিরিজ আর সেখানে চোটের কারণে থাকবেননা তামিম ইকবালও। তবে সাকিবের কথা হলো, তারা দুজন না থাকার পরও তো পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠে ইন্ডিয়াকে প্রায় হারিয়েই দিয়েছিলো বাংলাদেশ। এই বিষয়টি থেকেই অনুপ্রেরণা নিতে পারে বাংলাদেশ টিম।
“এটা আসলে খেলাধুলার অংশই, দুই-একজন খেলোয়াড় সবসময় ফিট থাকবে না। সবসময় খেলতেও পারবে না। তবে কেউ না থাকা মানে নতুন কারও সুযোগ। আশা করি তারা সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে ও ভালো করবে। কারও জন্য কিছু অপেক্ষা করে থাকে না। আমি আশা করি, বাংলাদেশ আরও ভালো করবে। আমাকে ও তামিমকে ছাড়া যদি এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলতে পারি, তাহলে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে না জেতার কারণ দেখি না।”