ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ তিন ম্যাচের বহুল প্রতীক্ষিত টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ স্বাগতিকদের ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টসে জিতে সাকিব-তামিমহীন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। বাংলাদেশের বোলিং তোপে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রান করতে সক্ষম হয় ভারত।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নবম ম্যাচে এসে প্রথমবারের মতো ভারতকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর এই জয়ের উপলক্ষটা অনেক বড় হওয়ার কারণ হলো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে ১০০০তম ম্যাচ জয়ের ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম এই সংস্করণের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। আর ১০০তম ম্যাচ জিতলো বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহীমের চোখ জুড়ানো ব্যাটিং বাংলাদেশকে শেষ হাসি হাসিয়েছে। দুর্দান্ত লড়াইয়ের এই ম্যাচে বাংলাদেশ শেষ ওভারে গিয়ে জিতেছে। অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাইমের ২৮ বলে ২ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ২৬ এবং সৌম্য সরকারের ৩৫ বলে ২ ছক্কা এক বাউন্ডারিতে ৩৯ রানই মূলত বাংলাদেশের জয়ের ভীত হিসেবে দাঁড়িয়েছিল। তবে ওপেনার লিটন দাস আউট হয়েছেন ৪ বল খেলে ৭ রান করেই।
আর বিদ্ধংসী মুশফিকুর রহীম বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন জয়। অধিনায়ক মুশফিকের পশে থেকে টাইগারের মতোই সাহায্য করেছেন টাইগারদের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৪৩ বলে ৮ বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় অসাধারণ ৬০ রানের এক ইনিংস খেলে টাইগারদের জয়ের মূল কারিগর ছিলেন মুশফিক। বিশেষত খলিল আহমেদের করা ১৯ ওভারের শেষ চার বলে চার দৃষ্টিনন্দন বাউন্ডারি বাংলাদেশের মানুষের অনেকদিন মনে থাকবে। আর এই চার বাউন্ডারিই মূলত বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেছে। অসাধারণ এই ইনিংস খেলে তাই ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন মুশফিকই।
দুই ভায়রা ভাইয়ের অবিচ্ছিন্ন ৪০ রানের জুটিতে ম্যাচের ৩ বল বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ভারতের অভিষিক্ত শিভাম দুবের করা শেষ ওভারের তৃতীয় বলে অসাধারণ এক ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় দেখান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।
ভারতের হয়ে দীপক চাহার, যুজবেন্দ্র চাহাল ও খলিল আহমেদ একটি করে উইকেট লাভ করেন।
ম্যাচের শুরুতে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি ভারতের। বিরাট কোহলির অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ৫ বল খেলে ২ চারে ৯ রান করে শফিউলের প্রথম ওভারের শেষ বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন। তারপরে কেএল রাহুল ব্যাটিংয়ে নামেন। ১৭ বলে ২ বাউন্ডারিতে ১৫ রান করে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের বলে রিয়াদকে সহজ ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ দেখেন তিনিও।
এরপর বিপ্লব নিজের তৃতীয় ওভারে ২ ছক্কা ও ১ চারে ২২ রান করা শ্রেয়াস আইয়ারকে ফেরান। কিন্তু অপর প্রান্তে থাকা ধাওয়ান ভারতের দুর্গ আগলে রাখেন। ৪২ বলে ১ ছক্কা ও ৪ বাউন্ডারিতে ৪১ রান করে মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত এক থ্রুতে রান আউট হয়ে ফিরেন তিনি।
শেষ দিকে ২৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৭ রান করা ঋষভ প্যান্ট শফিউলের বলে ফিরলে বিপাকে পড়ে ভারত। তবে ওয়াশিংটন সুন্দর ৫ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে ভারতকে ১৪৮ রানের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন।
বাংলাদেশের হয়ে সাইফুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম দুইটি করে উইকেট লাভ করেন। আর আফিফ হোসেন নেন একটি উইকেট।