নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদ আল নূরে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে।তবে অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। এ ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে পারলেই বিদেশে খেলতে যাবে বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ড স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুর দেড়টায় আল নূরে সন্ত্রাসী হামলা হয়। শহীদ হয়েছেন ২ বাংলাদেশিসহ ৪০ জন।গুরুতর আহত হয়েছেন ২০ জনের অধিক। এদের মধ্যে একজন হামলাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করছিল। এ বীভৎস ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
সেই মসজিদেই নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন তামিম-মিরাজরা। ভিন দেশি ক্রিকেটাররা বাংলাদেশে যেমন নিরাপত্তা প্রদান করা হয়, কিন্তু বিদেশের মাটিতে তেমন নিরাপত্তা দেয়া হয়না বাংলাদেশের ক্ষেত্রে।সদ্য ঘটে যাওয়া ঘটনায়ও তামিম-মুশফিকদের সাথে কোনো নিরাপত্তা বাহিনী ছিলো না! যা নিয়ে দেশ-বিদেশে তুমুল সমালোচনা তৈরি হয়।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছেও এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। এমনকি বিসিবির পক্ষ থেকে ক্রিকটে নিউজিল্যান্ডের কাছেও এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাবি করা হয়।
ঘটনার পর পরই বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে ক্রিকেট দলের বিদেশ সফরে নিরাপত্তার বিষয়টাই আগে খতিয়ে দেখা হবে। এরপরই দল সফরে যাবে কি যাবে না- তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল দেশে ফিরার পর আজ দুপুরে ক্রাইস্টচার্চ হামলায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়ার জন্য শুকরানা মিলাদের আয়োজন করা হয় বিসিবিতে।
সেই মিলাদ মাহফিলের পরই মিডিয়ার সামনে কথা বলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন। সেখানে আবারও উঠে আসে ক্রিকেটারদের নিরাপত্তার বিষয়টি।
এমনকি বিসিবি প্রধানকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ভবিষ্যতে কোনো সফরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিসিবির নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে কি না। জবাবে বিসিবি প্রধান জানিয়ে দেন, প্রয়োজন হলে ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিসিবির নিজস্ব নিরাপত্তা কর্মী পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা যেহেতু প্র্যাকটিসিং মুসলিম। মসজিদে যেতে হয়, নামাজ পড়তে হয়- এসব দিক বিবেচনা করা নিজস্ব সিকিউরিটির ব্যবস্থা করা হবে কি না জানতে চাইলে বিসিবি প্রধান বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য আরো একটা ইস্যু। বিদেশে সাধারণত সিকিউরিটি দেয়া হয় খেলার মাঠে, হোটেল থেকে মাঠে যাওয়া-আসা। এ ছাড়া অন্য কোথাও ব্যবস্থা থাকে না। তবে ওদের (দ্বিপাক্ষিক সিরিজের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক দেশ) সাথে আগে বলে কিছু করা যায় কি না তা আমরা দেখবো। আমাদের এখান থেকে সিকিউরিটি যাবে কি না তা নির্ভর করবে আমরা কি পাচ্ছি, তার উপর।’
মানে টাইগারদের বিদেশ সফরে নামাজ পড়ার সময় যাতে কোন নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন না উঠে তার জন্য স্বাগতিক দেশ যদি আলাদা সিকিউরিটি চাইবে বিসিবি। আর তারা না পারলে নিজস্ব সিকিউরিটি পাঠাতে চায় বিসিবি।
আগের অবস্থার সঙ্গে এখনকার অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। সে হিসেবেই এখন চিন্তা-ভাবনা করতে হবে বলে জানান বিসিবি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘আগে তো বিষদ আলোচনা করতাম না। নিউজিল্যান্ডে তিনদিন ছিলাম, সেখানে কোনো পুলিশই দেখিনি। ওই দেশটাই হয়তো এমন। পুলিশ থাকলেও তারা মসজিদে পাহারা দেয়ার কথা চিন্তাই করেনি; কিন্তু নতুন ঘটনা চোখ খুলে দিয়েছে। এখন ব্যবস্থা নিতেই হবে। আমাদের যদি মনে হয় বিদেশ থেকে যা দিচ্ছে, তা যদি যথেষ্ট মনে না হয়, তাহলে অবশ্যই আমরা ব্যবস্থা নিবো (নিজস্ব সিকিউরিটি পাঠাবো)। তবে এটা তারা যা দিচ্ছে, তার উপর নির্ভর করবে।’