ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে অনেক ক্রিকেটার বিদ্ধংসী খেলছেন আবার অনেকে আশাব্যাঞ্জক কিছু করে দেখতে পারছেননা। তবে বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা মনে করেন ঢাকা লীগের ফর্ম ভালো বা খারাপ যাই হোক না কেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তা খুব একটা প্রভাব ফেলে না। পাপনের সুরে সুর মিলিয়ে মাশরাফিও বললেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অভিজ্ঞরাই সেরা ১৫ তে জায়গা করে নেবে আর তাদের নিজের খেলার প্রতি বেশি করে নজর দেয়া উচিত এখন থেকেই কারণ বিশ্বকাপ খুব একটা দূরে নেই।
গতকাল পাপনের বক্তব্যে পরিষ্কার বোঝা যায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে করা বেশি অগ্রাধিকার পাবেন। নতুনদের জন্য খুব একটা জায়গা নেই সেখানে। যেমন এবার ঢাকা লিগে প্রথম পাঁচ ম্যাচেই দুটি শতক ও দুটি অর্ধশতক করে চারশর বেশি রান করেছেন ওপেনার সাইফ হাসান। আবার, এনামুল হক যিনি গত বছর জাতীয় দলে ফিরেছিলেন কিন্তু ভালো না করায় বাদ পড়ে যান। অথচ এবার তিনি লিগে সেঞ্চুরি করেছেন টানা তিন ম্যাচে।
ফরহাদ রেজা অনেকদিন ধরেই জাতীয় দলের বাইরে। অথচ ঢাকা লিগে ব্যাটে-বলে চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স দেখাচ্ছেন তিনি। লিগে ভালো করছেন ইয়াসির আলি রাব্বি। আবার, জাতীয় দলে শেষ ১০ ম্যাচে অসাধারণ পারফরম্যান্স করা ইমরুল কায়েস লিগে ৬ ম্যাচে করেছেন মাত্র ৯২ রান।
মঙ্গলবার মিরপুরে এক অনুষ্ঠানে অধিনায়ক মাশরাফির কাছে এই ক্রিকেটারদের সম্ভাবনা-শঙ্কা নিয়েই জানতে চাওয়া হলে তার জবাব ছিল এরকম।
মাশরাফি বলেন, “আসলে ঢাকা লিগ নিয়ে তেমন একটা ভাবনা নেই। কারণ অনেকবার আমি দেখেছি যে এখানে কেউ দিনের পর দিন সেঞ্চুরি করেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গিয়ে ধুঁকেছে। এখানে উইকেট বলেন, ক্রিকেটের ইন্টেন্ট বলেন, এগুলো তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কাছাকাছি নয়। এখানে অনেকে রান করে বা উইকেট পেয়ে ওখানে ভালো করতে পারে না।”
“আমার কাছে মনে হয় মানসিকতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানসিকভাবে প্রস্তুত কিনা এবং এটার সাথে সেই ক্রিকেটার নিজের খেলায় নির্দিষ্টভাবে কি করছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে মনে হয় বিশ্বকাপ পুরোপুরি মেন্টাল গেম। এই কে এক-দেড় মাসে মানসিকভাবে কতটা তৈরি হতে পারছে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।”
যেহেতু নিজে নির্বাচক কমিটির অংশ নন তাই দল নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে চাননি মাশরাফি। তবে যে ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপে খেলার সম্ভবনা আছে তাদের নিজের খেলার উন্নতিতে জোর দিতে বললেন তিনি।
“দল নির্বাচন আমার হাতে নেই। আগেও স্পষ্ট করেছি এখনও করছি। কিন্তু যে ১৫ জনই আসুক না কেন, তারা পারফর্ম করে আসছে কিনা, সেটি বিষয় নয়। আমাদের মূল ফোকাস থাকবে আয়ারল্যান্ড সিরিজ এবং বিশ্বকাপে দল হিসেবে কেমন করছি, সেটি। আগেই বলেছি লিগে অনেক উইকেট পেয়েও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমরা ধুঁকেছি আগে এবং আমার মতো সিনিয়র ক্রিকেটার বা অন্য যারা আছে তারাও। আবার এখানে খারাপ করেও ওখানে গিয়ে ভালো করেছি। আকাশ-পাতাল ব্যবধান দুটি জায়গার মধ্যে।”
“এই কারণে আমি বলছি যে মানসিক দিক থেকে কে তৈরি থাকবে, তার ওপরে অনেক কিছু নির্ভর করবে। হয়তো দেখা গেল যে এখানে কেউ লিগ খেলছে ঠিকই, তবে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ে কাজ করছে, যেটি বিশ্বকাপে তার প্রয়োজন হতে পারে। আমি মনে করি, তার ঐদিকেই নজর থাকা উচিত, যেটি সে চিন্তা করছে। মানসিকভাবে প্রস্তুত মানে আসলেই প্রস্তুত। যারা রান করছে বা ভালো করছে, সেটি নির্বাচক প্যানেল ঠিক করবে যে কাকে নেবে, কাকে নেবে না।”