বীরেন্দ্র শেবাগ তার খেলোয়াড় জীবন থেকেই আলোচনা সমালোচনার তুঙ্গে ছিলেন সবসময়। কখনো ভালো খেলে আবার কখনোবা কাওকে সরাসরি বা তির্যক ভাবে কথার মাধ্যমে আক্রমণ করে। আর এখন তাকে নিয়ে আলোচনা সমালোচনার যেন শেষ নেই। কারণ খেলা বাদ দেয়ার পর তিনি ব্যাট বল ছেড়ে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। যেখানে তিনি কখন কাকে কিভাবে আক্রমণ করছেন তা নিজেই জানেন কিনা কে জানে!
কখনও ভারতের কোচ হওয়ার জন্য দুই লাইনের আবেদন করে সমালোচিত হচ্ছেন। আবার কখনো কোনো দেশ বা ব্যাক্তিকে আক্রমণ করে ট্রল করছেন। তবে এবারে তার সমালোচনার বিষয়টি সাম্প্রদায়িক।
সম্প্রতি ভারতের কেরালা রাজ্যে ঘটে যাওয়া এক নৃশংস ঘটনায় যখন গোটা ভারত স্তম্ভিত ঠিক সেই মুহূর্তে বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক রং মাখিয়ে প্রকাশ করায় শেবাগের ভেতরে লুকায়িত সাম্প্রদায়িক চরিত্রটি যেন ফুটে উঠেছে।
কেরালায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন ক্ষুধার্ত যুবককে খাবার চুরির অপরাধে নৃশংস ভাবে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেছে সেখানকার কিছু মানুষ। এমন ঘটনায় যখন ভারতের মানুষ স্তম্ভিত ঠিক তখনই শেবাগের বিরুদ্ধে বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক রং দিয়ে টুইট করার অভিযোগ উঠল।
ভারতের জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের সূত্র অনুযায়ী কেরালার আট্টাপাডি এলাকার বাসিন্দা ৩০ বছরের মধু ক্ষুধার জ্বালা সইতে না পেরে চাল চুরি করেন বলে অভিযোগ ওঠে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে। আর উন্মত্ত জনতা এই কারণেই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে পিটিয়ে আধমরা করে ফেলে। পরে হতভাগ্য যুবক মধুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
শেবাগের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি এই ঘটনার জন্য দায়ী করে তিনজন মুসলিম যুবককে দোষারোপ করে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে টুইট করেছেন।
তিনি টুইটারে লেখেন, ‘‘মধু ১ কেজি চাল চুরি করেছিল। উবেইদ, হুসেন, আবদুল করিমরা দল বেঁধে বেচারা আদিবাসীকে পিটিয়ে মেরে ফেলল। এটা সভ্য সমাজের লজ্জা। এমন ঘটে, তবে তাতে কিছু এসে যায় না, এতে আমি লজ্জা পাই।’’ টুইটটিতে তিনি সরাসরি কোনো ধর্মকে আক্রমণ না করলেও বিশেষ ধর্মাবলম্বী যুবকদের নাম উল্লেখ করায় তার ইঙ্গিত বুঝতে সমস্যা হয়নি টুইটার ব্যাবহারকারীদের।
স্থানীয় পুলিশের তরফ থেকে জানা যায় এই ঘটনায় ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের নাম হলো আনিশ, রাধাকৃষ্ণান, আবুবকর, সতীশ, সিদ্দিক, বৈজু, হুসেন, হরিশ, মারাক্কার, সামসুদ্দিন, উবেইদ, নাজিব, জইজুমন, আবদুল করিম, সাজিব, মুনীর।
এই বিষয় নিয়ে টুইটারে শোরগোল শুরু হতেই শেবাগ আগের টুইট মুছে দিয়ে তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নতুন টুইট লেখেন। নতুন টুইটে তিনি লেখেন, ‘‘একটা ভুল মেনে না নেওয়া মানে আবার সেই ভুলই করা। অসম্পূর্ণ তথ্য ছিল বলে আরও অনেকের নাম উল্লেখ করতে পারিনি। তাই আন্তরিক ভাবেই ক্ষমা চাইছি। তবে টুইটটি কিন্তু মোটেই সাম্প্রদায়িক ছিল না। হত্যাকারীদের ধর্মীয় পরিচয় আলাদা হতে পারে, তবে হিংস্রতা, নৃশংসতায় সকলেই সমান, এক। শান্তি আসুক।’’ এবং পরবর্তীতে এই টুইটটিও মুছে দেন শেবাগ।
এর আগে গুরমেহর সহ আরো অনেক ইস্যুতে বিভিন্ন রকম টুইট করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন শেবাগ।
সূত্র: এবেলা