শাহরিয়ার নাফিসের এমন কথায় অনেকেই অবাক হতেই পারেন। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে তরুণদের আইডল হিসেবে দেখেন না বাংলাদেশের এই বাঁহাতি ওপেনার ব্যাটসম্যান। তার মতে তরুণদের আদর্শ হওয়ার মত গুণ সাকিবের মধ্যে নেই।
বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব। শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট না বিশ্বের প্রতিটি টিমই চায় এমন এক অলরাউন্ডারকে। ব্যাট বলে অসংখ্য রেকর্ডের মালিক তিনি। আর চলতি বিশ্বকাপে ক্যারিয়ারের সেরা সময়টাই পার করছেন তিনি। একের পর এক রেকর্ডের ফুল ঝরাচ্ছেন মাঠের ক্রিকেটে। ব্যাট হাতে ৬ ম্যাচে করেছেন ৪৭৬ রান সাথে আছে ১০ উইকেট।
এছাড়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ১০০০ রান এবং ৩০ উইকেট নেওয়া একমাত্র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। এত সাফল্য আর অর্জনের পরেও সাকিব আল হাসানকে তরুনদের আইডল হিসাবে দেখছেন না বাংলাদেশের হয়ে ২৪ টেস্ট ও ৭৫ ওয়ানডে খেলা এই ভদ্রাচিত ওপেনার।
সাকিব সম্পর্কে নাফিস বলেন, “সাকিব আল হাসান কে যদি আপনি একজন খেলোয়াড় হিসেবে ধরেন, আমরা ঐতিহ্যগতভাবে বইয়ের মধ্যে যে আদর্শ ক্রিকেটারের কথা বলি সেটা ওর মধ্যে নাও থাকতে পারে।”
আসলে সাকিবের অনুশীলন প্রক্রিয়া তরুণদের অনুসরণ করতে না করেছেন শাহরিয়ার নাফিস। ২০০৭ বিশ্বকাপে সাকিব ছিলো নাফিসের সতীর্থ। বাংলাদেশ দলে সাকিব যখন নতুন মুখ শাহরিয়ার নাফিস তখন দেশসেরা ওপেনার। বিভিন্ন সময়ে জিমে ও অনুশীলনে খুব কাছ থেকে সাকিবকে দেখেছেন নাফিস। কিছু নির্দিষ্ট অনুশীলন করেই সফলতা পেয়েছেন সাকিব যা তরুণ ক্রিকেটারের ভালো করার জন্য পর্যাপ্ত নয়।
সাকিবের অনুশীলনের ব্যাখ্যায় নাফিস বলেন, “ও অনুশীলন কম করছে, কম জিম করছে, রানিং কম করছে। অন্যান্য ক্রিকেটারের সঙ্গে ওর পার্থক্য হচ্ছে ও খেলোয়াড় হিসেবে অন্যান্যদের থেকে মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী।”
দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের প্রধান গুণ সে সামান্য অনুশীলনেই নিজের শতভাগ বের করে আনতে সক্ষম। ক্লাসের সবচেয়ে কম পড়া স্টুডেন্ট কিন্তু সব সময় এক্সামে টপ করে এমন ব্যাপার। কিন্তু সবার মধ্যে সেই গুণ নাও থাকতে পারে যা সব ক্রিকেটারের মধ্যে নেই। তাইতো সাকিব বিশ্বসেরা। ও অল্প যে অনুশীলন করে, সেটাই মাঠে শতভাগ দিতে ওকে সাহায্য করে।’
তরুণদের উচিত তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিমের মতো কাউকে অনুসরণ করা, ভবিষ্যত ক্রিকেটারদের প্রতি এমনই উপদেশ নাফিসের। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান বলেন, ‘কোনো খেলোয়াড় যদি কাউকে অনুসরণ করতে চায় তাহলে তামিম বা মুশফিককে করা উচিত। কারণ তারা প্রচুর ব্যাটিং অনুশীলন করে, রানিং করে, জিম করে। তো এদের অনুসরণ করা উচিত।’
আইসিসির এক সাক্ষাৎকারে মাহমুদউল্লাহকে জিজ্ঞেস করা হয় যে জিমে সবচেয়ে বেশি সময় দেয় কে। তিনি এক কথায় মুশফিকুর রহিমের কথা বলেছিলেন। অর্থাৎ মুশফিক যে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করেন সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
একথা পরিস্কার যে, নাফিসের মতে তরুণদের উচিত মাঠে ও মাঠের বাইরে প্রয়োজন কঠিন অনুশীলন ও দৃঢ় মনোবল। আর পরিশ্রম ও অনুশীলনের ঊর্ধ্বে কিছুই নয়। তাই সাকিব কে আইডল হিসেবে নিতে না করেছেন নাফিস।