গতকাল এশিয়া কাপের ফাইনালে কোনো নিয়মিত বোলারের ওভার না থাকায় মাশরাফি শেষ ওভারের জন্য প্রথমে ভেবেছিলেন সৌম্য সরকারের কথা। এবং, বল করার জন্য হাতে বলও নিয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু, পরে মত বদলে
মাশরাফি সৌম্যর বদলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে বল তুলে দেন। নিয়মিত বোলার হিসেবে বাংলাদেশ দলে সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ কেউই ছিলেননা কখনোই। কোটা শেষ হয়ে গিয়েছিলো মোস্তাফিজ, রুবেল, মাশরাফি ও নাজমুলের মতো নিয়মিত বোলারদের
। নিয়মিত বোলারদের মধ্যে শুধুমাত্র মেহেদী হাসান মিরাজের ওভার ছিল। কাল বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাটিং ও বোলিং দুটিই ওপেন করার প্রথম কীর্তি গড়েছেন মিরাজ। তাহলে মিরাজের কথা কেন ভাবলেননা মাশরাফি!
আসলে ওপেনার ব্যাটসম্যান হিসেবে কাল যতটা ভালো করেছিলেন ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে মিরাজ ততটাই খারাপ করেছেন বোলার হিসেবে। আর সে কারণেই মিরাজকে শেষ ওভারে বোলিংয়ে আনার সাহস পাননি মাশরাফি। কাল দলের তিন স্পিনারের কাছে থেকেই আরেকটু বেশি কিছু আশা করেছিলেন মাশরাফি। এবং, সেটি না পাওয়ায় গোপন করলেন না হতাশাও।
সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘প্রথম ইনিংসে বল যেভাবে স্পিন করেছে, তাতে আমাদের স্পিনারদের আরও আশা করেছিলাম। মিরাজ এই টুর্নামেন্টে সেরা বোলার, রিয়াদও (মাহমুদউল্লাহ) গত ম্যাচে খুব ভালো বোলিং করেছেন। আজ তারা আরেকটু ভালো করতে পারত।’
স্পিনাররা ভালো করলে শেষ ওভারটা মোস্তাফিজ বা রুবেলকে দিয়ে করাতে পারতেন মাশরাফি, ‘ওদের যখন সাড়ে ৫ রান করে লাগে, তখন আমি মিরাজকে এনেছি। রিয়াদকে এনেছি। তখন কেউ যদি দুইটা ওভারও ভালো বোলিং করে দিত, তাহলে খুব ভালো হতো। একজন স্পিনার ভালো করলেও ৪৬ নম্বর ওভার থেকে আমি রুবেল ও মোস্তাফিজকে শেষ পর্যন্ত বোলিং করাতে পারতাম। তাহলে হয়তো ভারতের কাজটা অনেক কঠিন হতো। কারণ, ওদের বোলিংয়ে অনেক ভ্যারিয়েশন আছে।’
মাহমুদউল্লাহর হাতে যখন বল তুলে দেন তখন তাঁকে
কি বলেছিলেন মাশরাফি? ‘রিয়াদকে বলছিলাম, ওরা মারতে যাবে। মারতে গেলে মিস হিট হতে পারে। বিশেষ করে কুলদীপ মারার চেষ্টা করবে। যাদব যেহেতু ব্যাটসম্যান, ও হয়তো তা করবে না। পঞ্চম বলটাই কিন্তু কুলদীপের ব্যাটে ইনসাইড এজ হয়েছিল। আসলে এ রকম পরিস্থিতিতে একটু লাক ফেবার করতে হয়।’
ভাগ্য যাদবের পক্ষে থাকায় ৫ম বলে ১ রান হয়ে সমান হয়ে গিয়েছিলো স্কোর। মাশরাফি ভালো ভাবেই জানতেন ২০১৮ এশিয়া কাপের বাইলজ অনুযায়ী ফাইনাল ম্যাচ যদি টাই হয় তাহলে সুপার ওভারেই নিষ্পত্তি হবে ম্যাচের ভাগ্য। মাশরাফির সেটি জানা ছিল। শেষ বলটা নিয়ে যা বললেন তিনি, ‘ওই বলটা হয় ডট হতে হতো অথবা আউট। ও ইয়র্কারই করেছিল। কিন্তু বলটা প্যাডে পড়ে গেল। রিয়াদ ভালো করেছে। ওই অবস্থায়, মানে ৬ বলে ৬ রান লাগে, এই অবস্থায় ও ভালো ফাইট করেছে।’
মিডল অর্ডারের ব্যার্থতার পর যদিও স্পিনারদের কাছে থেকে একটু বেশিই আশা করেছিলেন মাশরাফি। তবুও, এরকম একটি বাজে স্কোর করার পরও দলগতভাবে অসাধারণ খেলে অনেক আগেই শেষ হতে যাওয়া একটি ম্যাচকে শেষ বল পর্যন্ত ফাইট করে টেনে নিয়ে যাওয়ায় পুরো বোলিং ইউনিটকেই ‘ফাইট করা’র কৃতিত্বটা দিচ্ছেন মাশরাফি।